'ধর্ষকদের নিয়ে লোকে উল্লাস করছে! আমরা কী জবাব দেব বিলকিসকে!' ক্ষোভ প্রকাশ শাবানার
ভারতের বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় দোষীদের কারাগার থেকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার। বিলকিস বানোর ধর্ষকদের মুক্তির সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন নিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনেকে। ধর্ষকদের মেয়াদ শেষের আগেই মুক্তি দেওয়া নিয়েও একাধিক জায়গায় প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। এবার এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানালেন বলিউড অভিনেত্রী শাবানা আজমি।
এক সংবাদমাধ্যমকে এই ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে শাবানা বলেন, 'আমি খুব অবাক হয়েছি। ধর্ষকদের নিয়ে লোকে উল্লাস করছে। সমাজের কাছে কী বার্তা যাচ্ছে এই ঘটনায়! আর নারী সাংসদ এবং নারী মন্ত্রীরা পুরো ঘটনায় একেবারে চুপ। এই দেশের প্রধানমন্ত্রী নারী শক্তির কথা বলেন! আমার নিজের লজ্জা লাগছে। আমরা কী জবাব দেব বিলকিসকে!'
প্রসঙ্গত, গত ১৫ আগস্ট ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তির দিনে বিলকিস বানো গণধর্ষণ মামলায় ১১ জন দণ্ডিতকে মুক্তি দেয় গুজরাট সরকার। রীতিমতো ফুল, মালা পরিয়ে তাদের বরণ করা হয়েছিল। এই ভিডিও ভাইরাল হতেই দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। গণধর্ষণে অভিযুক্তদের কোন যুক্তিতে মুক্তি দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এমনকি যে বিচারপতি ওই অভিযুক্তদের সাজা দিয়েছিলেন, তিনিও এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন।
কী হয়েছিল ২০০২ সালে
২০০২ সালে সাবরমতী এক্সপ্রেসে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর গুজরাট জুড়ে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দাঙ্গায় বিলকিস বানো নামক আট মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা নারী গণধর্ষণের শিকার হন। বিলকিসের চোখের সামনেই আছড়ে মেরে ফেলা হয় তার তিন বছরের কন্যা সন্তানকে। হত্যা করা হয় পরিবারের সাত সদস্যকেও।
পরে ২০০৪ সালে এ ঘটনার ১১ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১১ জন দোষী সাব্যস্তকে ২০০৮ সালে যাবজ্জীবন সাজা দেয় মুম্বাইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত। পরে মুম্বাই হাইকোর্টও একই সাজা বহাল রাখে। সাজা কমানোর আর্জিতে চলতি বছর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল এক দণ্ডিত। পরবর্তীতে মেয়াদ ফুরানোর আগেই ১১ জনকে মুক্তি দিয়েছে গুজরাট সরকার, যা ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক।