‘সবাইকে ছেড়ে চিরকালের জন্য চলে যেতে হবে, ভাবলেই ভয় লাগে’
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় 'সুতরাং' সিনেমায় প্রথমবারের মতো অভিনয়; এরপর সত্তর ও আশির দশকে অজস্র চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শকের হৃদয় জয় করেছেন।
বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতের কোন অভিনেত্রী তার মত করে গণমানুষের এতটা কাছে যেতে পারেন নি। 'কবরী' নামে চিনলেও ভালবেসে মানুষ তাকে বলত 'মিষ্টি মেয়ে'।
অথচ এত ভালবাসার মধ্যে থেকেও কবরী ছিলেন তার মতন। একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাতকারে যখন তাকে মৃত্যুর বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হয়, কবরী জানান, মৃত্যুকে বড্ড ভয় তার।
সেদিন তিনি বলেছিলেন, "মানুষের জীবনে অনেকগুলো দরজা থাকে। তার মধ্যে মৃত্যু হলো শেষ দরজা। মৃত্যুর কথা মনে হলে আমার চোখ জলেতে ভরে যায়। কবরী আর কোনো দিন ফিরে আসবে না, সামান্য একটু কথা বলতেও নয়। সবাইকে ছেড়ে চিরকালের জন্য চলে যেতে হবে, ভাবলেই ভয় লাগে। তাই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মানুষের জন্য কাজ করতে চাই। যত দিন বাঁচব, মানুষের কাছে আপন হয়ে থাকতে চাই, মানুষের কাছাকাছি থাকতে চাই। আরও কিছু উদ্ভাবনের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকতে চাই"।
শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাবেক এই সাংসদ, চিত্রনায়িকা ও নির্মাতা।
গত ৫ এপ্রিল করোনাভাইরাস রিপোর্ট পজিটিভ আসার পরপরই রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কবরীকে।
পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে ৮ এপ্রিল শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয় তাকে।
সেখানে অক্সিজেনের মাত্রা ওঠানামা শুরু হলে বৃহস্পতিবার বিকেলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
আজ শনিবার বাদ জোহর কবরীকে বনানী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে। জানাজা শুরুর আগে এই অভিনয়শিল্পীকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।
অনবদ্য অভিনয় ও সৃজনশীল কাজের মধ্য দিয়ে বাঙালির হৃদয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন চলচ্চিত্রের 'মিষ্টি মেয়ে' কবরী।