‘প্যারাসাইট’ ছাড়াও কোরিয়ার সাড়া জাগানো পাঁচ ছবি
অস্কারে ‘প্যারাসাইট’-এর মহাবিজয়ের পর দুনিয়াজুড়ে দক্ষিণ কোরিয়ান চলচ্চিত্রের প্রতি ব্যাপক আগ্রহ তৈরি হয়েছে। বং জুন-হোর শুরুর দিকের কাজ কেমন, তার সমসাময়িক কিংবা অগ্রজ ও অনুজ চলচ্চিত্রকাররা কেমন নির্মাতা, তা পরখ করে নিতে চাচ্ছেন অনেকেই।
চলুন, আল জাজিরার সূত্র ধরে এ রকম পাঁচটি চলচ্চিত্রের কথা জানা যাক-
ওল্ডবয়
জানালাবিহীন একটা রুমে ১৫ বছর আটক থাকার পর একদিন দরজা খুলে বেরিয়ে পড়ে ওহ দায়ে-সু নামের এক লোক।
হাতুড়ি হাতে, প্রতিশোধের নেশায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে সে। কে তাকে বন্দী করেছিল, তার স্ত্রী ও কন্যার ভাগ্যে কী ঘটেছে- সেই রহস্য উন্মোচন করতে সে নৃশংস হয়ে ওঠে। এটিই ‘ওল্ডবয়’। ২০০৩ সালের এই চলচ্চিত্র পার্ক চ্যান-উকের ‘প্রতিহিংসাত্রয়ী’র একটি। মুক্তির প্রায় দুই দশক পরও দর্শকদের এটি বিস্মিত করছে।
দ্য স্পাই গন নর্থ
এই চলচ্চিত্রের প্রেক্ষাপট ১৯৯০-এর দশক। ‘ব্ল্যাক ভেনাস’ ছদ্মনামে খ্যাত দক্ষিণ কোরিয়ান এজেন্ট পার্ক চায়ে-সেও ঢুকে পড়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক তল্লাটে। আলোচিত সেই ঘটনার ছায়া অবলম্বনেই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন ইয়ুন জং-বিন। উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান নিউক্লিয়ার প্রোগ্রামের খোঁজ নিতে, বিজ্ঞাপন নির্মাণের ভান করে, দেশটির সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে সেবার অনুপ্রবেশ করেছিলেন পার্ক।
২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া এই চলচ্চিত্রে দেখা যায়, নিজ দেশে ফিরেও স্বস্তিতে নেই পার্ক। তিনি আসলে কোন পক্ষের লোক- সেই সন্দেহ ডালপালা ছড়াতে থাকে আর তার জীবন হয়ে ওঠে বিপন্ন, এভাবেই চলচ্চিত্রটি থ্রিলারে রূপ নেয়।
দ্য হোস্ট
একজন আমেরিকান মিলিটারি প্যাথোলজিস্ট তার কোরিয়ান সহকারিকে নির্দেশ দেন, সিউলের একটি ড্রেনে ২০০ বোতল পরিত্যক্ত ফরমালহাইড ফেলে দেওয়ার জন্য। ফেলার পর সেখানে জন্ম নেয় একটি উভয়চর দানব। সেটির আতঙ্কে কাঁপতে থাকে সবাই। আমেরিকানদের উপস্থিতির সংখ্যা ও বিদ্বেষ যত বাড়ে, সরকার তত তালগোল পাকিয়ে ফেলে।
এটিও ‘প্যারাসাইট’ নির্মাতা বং জুন-হোর ছবি। জগতজোড়া খ্যাতিমান হয়ে ওঠার আগে তার ক্যারিশমা কেমন ছিল, সে যাচাইও এ চলচ্চিত্রের মাধ্যমে করে নেওয়া যায়। ত্রাস, রম্য ও রাজনৈতিক মন্তব্যে ঠাসা ২০০৬ সালের 'দ্য হোস্ট' কোরিয়ার সর্বকালের সবচেয়ে ব্যবসাসফল চলচ্চিত্রের একটি।
বার্নিং
এক হতভাগা উঠতি লেখক, এক রূপসী তরুণী ও এক আগন্তুকের ত্রিমুখী সম্পর্ক নিয়ে ২০১৮ সালে মুক্তি পেয়েছে লি চ্যাং-দংয়ের ‘বার্নিং’।
হারুকি মুরাকামির ছোটগল্পের ছায়া অবলম্বনে এর কাহিনি। শ্রেণি পরিচয়ে আলাদা, অথচ জীবনের অতৃপ্তিতে এক হয়ে থাকা তিন মানুষের গল্প এটি ।
দ্য হ্যান্ডমেইডেন
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া পার্ক চ্যান-উকের 'দ্য হ্যান্ডমেইডেন'কে অনেক সমালোচকই দশকসেরা চলচ্চিত্র হিসেবে গণ্য করেন।
সারা ওয়াটারের ‘ফিঙ্গারস্মিথ’ উপন্যাসের অনুপ্রেরণার এই চলচ্চিত্রের কাহিনি বুনেছেন পার্ক। জাপানি ঔপনিবেশের সময়ে গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাড়ি ছাড়া এক হতদরিদ্র মেয়ের ঐশ্বর্যশালী হয়ে ওঠার কাহিনি এটি।
তবে কাহিনিটি এত সরলও নয়। একদম শেষ মুহূর্তের আগ পর্যন্ত একের পর এক টুইস্ট রয়েছে এখানে।