সিনেমায় ‘ধর্ষকের’ অভিনয় করায় ‘ভালো মানুষের’ চরিত্রে কখনো ডাক পাননি যে অভিনেতা
সিনেমার পর্দায় মোট ৩৫০ বার ধর্ষকের চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। মদ্যপান করেননি, তার এ রকম সিনেমা খুঁজে পাওয়া যায় না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইন্ডাস্ট্রিতে রঞ্জিতের পরিচয় হয়ে যায় 'রেপ কিং' বা 'ধর্ষণের রাজা' বলে। পর্দায় লাম্পট্য থেকে ধর্ষণের দৃশ্যকে তার মতো 'বিশ্বাসযোগ্য' করে তুলতে পেরেছেন খুব কম অভিনেতাই। তবে তা সত্বেও ছবিতে তার নারী সহ-অভিনেত্রীরা অত্যন্ত নিরাপদ এবং নিশ্চিন্ত বোধ করতেন তার সঙ্গে ওই দৃশ্যে অভিনয় করতে, দাবি রঞ্জিতের।
সম্প্রতি দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, কীভাবে বলিউডপাড়ায় 'ধর্ষক' নাম কুড়িয়েছিলেন তিনি। সঙ্গে আরও জানালেন, কেন তার ক্যারিয়ার ধীরে ধীরে থেমে গিয়েছিল।
বর্ষীয়ান এই অভিনেতার ভাষ্য, "আমাদের সেই সময়ে ছবির গল্প, চিত্রনাট্য শুনিয়ে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়ার চল ছিল না। বড় বড় তারকাদের হয়ত পরিচালক-প্রযোজকরা এক আধ লাইনে বলে শেষ করতেন ছবির গল্প। আমি মনে করতাম যখন আমার কাছে পরিচালক ছবির প্রস্তাব নিয়ে এসেছেন, তাহলে নিশ্চয়ই আমার অভিনয় করার মতো জায়গা রয়েছে। তাই একদিনের জন্যেও ছবির গল্প কিংবা চিত্রনাট্য নিয়ে মাথা ঘামাইনি। আমার ভিলেন সাজতেও কোনও আপত্তি ছিল না। যদিও পর্দায় ভিলেন সাজার কিছু 'মূল্য' তো চুকোতেই হয়েছিল। পরিবারের সঙ্গে মন কষাকষির মতো ইত্যাদি ব্যাপারে মুখোমুখি হতে হয়েছিল প্রায়ই। এভাবেই চলতে চলতে একদিন দেখলাম বলিউডপাড়ার ওই তকমাটা জুড়ে গেছে আমার নামের পাশে।"
তবে ধর্ষণের মতো দৃশ্যের শ্যুটিং করার সময় অভিনেত্রীদের তিনি এতটাই নিরাপদ বোধ করাতেন যে পরবর্তী সময়ে এমনও হয়েছে যে কোনও ছবিতে 'ধর্ষণ'-এর দৃশ্য থাকলে অভিনেত্রীরা রঞ্জিতকে নেওয়ার পরামর্শ দিতেন।
তাহলে এরকম ক্যারিয়ারে কী করে ভাঁটা এল? অভিনেতার কথায়, "এর প্রধান কারণ ফ্যাশনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। মেয়েরা এতো ছোট ছোট, খোলামেলা পোশাক পরতে অভ্যস্ত হয়ে গেল যে নতুন করে পর্দায় আর আমার খোলার কিছুই রইল না।"
আর তার নামের সঙ্গে এই তকমা এটে যাওয়ার প্রভাব পড়েছিল তার পেশা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবনেও। এতটাই যে নিজের ক্যারিয়ারে আর কোনোদিনও 'ভালো মানুষ' এর চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পাননি তিনি। পাশাপাশি বাস্তবে বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজে পেতেও সমস্যা হয়েছিল তার।
তিনি জানান,তার পরিবার এতটাই শান্তিপ্রিয় এবং রুচিশীল ছিল যে কোনোদিনও তিনি তার মা-বাবার মধ্যে সাংসারিক অশান্তি হতে দেখেননি।
তিনি বলেন, "ততদিনে আমার ভাই এবং ছোট বোনের বিয়ে হয়ে গেছে। এদিকে আমি তখনও সিঙ্গেল। মা-বাবা আমার বিয়ের জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠলেও সেই সময়ে জেনেশুনে কে-ই-বা তাদের মেয়েকে রঞ্জিতের সঙ্গে বিয়ে দেবেন?"
- সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস