তলোয়ার হাতে সাংবাদিককে হুমকি দিয়ে জেলে গিয়েছিলেন শাহরুখ!
বহু বছর ধরে মুম্বাই তার কর্মক্ষেত্র হলেও আদতে দিল্লির ছেলে শাহরুখ খান। তিন দশকের ওপর আরব সাগরের তীরে কাটিয়ে দেওয়ার পরেও টিপিক্যাল দিল্লিবাসীর কিছু ব্যাপার এবং ব্যবহার যে আজও তাকে ছেড়ে যায়নি, সে কথা নিজেই একাধিক সাক্ষাৎকারে অকপটে জানিয়েছিলেন। বিশেষ করে রেগে গেলে ওই ব্যাপারটা আরও প্রকট হয়ে ওঠে।
'তেহেলকা থিঙ্ক ২০১২'র অনুষ্ঠানের এক সাক্ষাৎকারে এমনই এক ঘটনার কথা নিজের মুখে জানিয়েছিলেন শাহরুখ। সালটা ১৯৯৩। 'কভি হাঁ কভি না'র শুটিং সারছেন 'বাদশা'। গৌরীর সঙ্গে তার বিয়ের বছর দুয়েক পেরিয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে একটিমাত্র খবরে ঢি ঢি পরে যায় চারদিকে। কী সেই খবর?
এক সহ-অভিনেত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন বলিউড 'বাদশাহ'।
খবরটি কানে যায় গৌরীরও। ব্যাপারটা এতদূর পর্যন্ত গড়ায় যে, শাহরুখকে বিয়ে করাটা ঠিক হয়েছে কি না, এমন প্রশ্নও উঁকি মেরেছিল গৌরীর মনে। অথচ খবরটি স্রেফ গুজব ছাড়া যার কিচ্ছু ছিল না।
গোটা বিষয়ে মেজাজ হারিয়েছিলেন শাহরুখ। পর্দার রোমান্টিক নায়কের ইমেজ ছিঁড়ে বেরিয়ে এসেছিল দিল্লির ওই বদমেজাজি স্বভাবের ছেলেটা!
প্রথমে ওই নারী সাংবাদিককে কৈফিয়ত আদায়ের জন্য ফোন করেন শাহরুখ। ওপ্রান্ত থেকে গোটা খবরটা স্রেফ মজা ছিল শোনার পর অভিনেতার মেজাজ যায় আরও বিগড়ে। ফোনেই বিস্তর অশ্রাব্য গালাগাল দেওয়ার পর শ্বশুরের দেওয়া 'তলোয়ার' হাতে নিয়ে ওই সাংবাদিকের বাড়ির কাছে পৌঁছে যান তিনি! পাঞ্জাবি শ্বশুরবাড়ির রীতি অনুযায়ী সেটি তিনি বিয়েতে পেয়েছিলেন।
একচোট মারপিট করার পর বাড়ির অন্দরেও ঢুকে পড়েছিলেন 'কিং খান'।
শাহরুখের কথায়, 'কী কাণ্ডটাই না করেছিলাম! খুব, খুব খারাপ করেছিলাম। আসলে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়েছিলাম। আর হাতে ওটা আদতে কুকরি ছিল, যা দিয়ে ওই সাংবাদিকের বাড়ির একজনের পায়ে আঘাতও করেছিলাম।'
এরপরের বিষয়টি ছোট্ট। ঘটনার একদিন পর পুলিশে এসে গ্রেপ্তার করে শাহরুখকে। থানা পর্যন্ত নিয়ে যায়।
থানায় একচোট ঝামেলা হওয়ার পর অবশেষে মাত্র একটি ফোন কল করার অনুমতি পান শাহরুখ। কারও কাছে সাহায্য পাওয়ার বদলে ওই একই সাংবাদিককে ফোন করে থানা থেকে হুমকি দেন তিনি!
দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে বলেছিলেন, এবার যেহেতু থানাতেও পৌঁছে গেছেন, তাই আর তার কোনো ভয় নেই। এরপর থানা থেকে বেরিয়ে ওই সাংবাদিককে স্রেফ 'কেটে ফেলবেন'!
যদিও এমন কিছুই আর করেননি শাহরুখ। মনের রাগ মনেই রেখে দিয়েছিলেন। শেষমেশ গোটা ঘটনা জানতে পেরেই এগিয়ে এসেছিলেন নানা পাটেকর। তার সাহায্যে জামিন পান 'বাদশা'।