টানা বৃষ্টিতে নিমজ্জিত চট্টগ্রাম
ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে চট্টগ্রাম নগরে। পানিতে নিমজ্জিত বিভিন্ন এলাকা। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসভবন, চাঁন্দগাও থানাসহ নগরের প্রায় সবগুলো প্রধান সড়ক পানির নিচে। জলাবদ্ধতার নগরীর ফ্লাইওভারগুলোতে আটকে আছে হাজারো গাড়ি।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ভারী বর্ষণের পর নগরের নিম্নাঞ্চলগুলো ডুবতে থাকে। রোববার দিনভর বৃষ্টিতে পানি ঢুকে গেছে অধিকাংশ বাসাবাড়িতে।
মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি নগরের বহদ্দারহাটে। তিনি পরিবার নিয়ে দোতলা ভবনে থাকেন। জলাবদ্ধতায় সে ভবনের নিচতলা পানিতে তলিয়ে গেছে। আশপাশের এলাকাগুলোতেও একই অবস্থা।
আজ সকাল সাড়ে আটটায় দেখা যায়, নগরের চাঁদগাও থানা এলাকা, মোহরা, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, আগ্রাবাদ, হালিশহর, ষোলোশহর, দুই নম্বর গেট, চকবাজার, বাকলিয়া, কাপাসগোলা, কাতালগঞ্জ, চাক্তাই, খাতুনগঞ্জের কোথাও হাঁটু, আবার কোথাও কোমরসমান পানির নিচে ডুবে আছে। নগরের নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। তাদের বসতভিটায় পানি ঢুকে পড়েছে।
কাতালগঞ্জের বাসিন্দা নাসিমা বেগম বলেন, 'বৃষ্টিতে গৃহবন্দী হয়ে পড়েছি। বাসার সামনে কোমরসমান পানি। তাই কর্মস্থলে যেতে পারিনি।'
বাদুরতলা এলাকার বাসিন্দা সারওয়ার কামাল বলেন, 'সড়ক থেকে কয়েক ফুট উঁচু আমাদের ভবনটি। তবুও ভবনের নিচতলা তলিয়ে গেছে। ভেতরে হাঁটু পানি জমে আছে।'
নগরীর বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের মুরাদপুর ও চাঁদগাও অংশে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ফ্লাইওভারের উপর আটকে আছে প্রচুর সংখ্যক যানবাহন।
আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আজও চট্টগ্রামে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। মাঝারি বৃষ্টি দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা প্রবল। এ কারণে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১০ হাজার ৯২১ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তিনটি সংস্থা। প্রায় পাঁচ বছর ধরে প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে। এ সময়ে প্রকল্পের বিভিন্ন কাজে ৪ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এরপরেও জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ থেকে রেহাই পাচ্ছে না নগরবাসী। ভারী বৃষ্টি হলেই নগরের বিভিন্ন এলাকা তলিয়ে যায়। এই পরিস্থিতির জন্য পরস্পরকে দায়ী করে দায় সারছে সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)।