চিরচেনা রূপে কক্সবাজার সৈকত

করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে টানা চারটি ঈদে ঘরবন্দি মানুষের আনাগোনায় চিরচেনা রূপে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার।
দেশী-বিদেশী বিপুলসংখ্যক পর্যটক আর স্থানীয় মানুষে গিজগিজ করছে পর্যটন নগরীটি। সৈকতে বিপুলসংখ্যক মানুষকে নিরাপত্তা দিতে কাজ করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ড কর্মীরা।
কলাতলী মেরিন ড্রাইভ হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান জানান, ঈদের টানা ছুটির প্রথম দিন পর্যন্ত কক্সবাজারের সবকটি হোটেল-মোটেলের ৮০ শতাংশের বেশি কক্ষ ভাড়া হয়ে গেছে। বুধবার কক্সবাজারে অন্তত এক লাখের মতো দেশী-বিদেশী পর্যটক ভ্রমণে এসেছেন।
বিপুলসংখ্যক পর্যটক সমাগমকে কেন্দ্র করে হোটেল-মোটেল ও খাবার রেস্তারাঁগুলো যাতে অতিরিক্ত দাম না নেয়, সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বুধবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত সৈকতের লাবণী থেকে কলাতলী পয়েন্ট পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা লোকারণ্য দেখা গেছে। কেউ ঘুরে বেড়িয়েছেন বিস্তীর্ণ সৈকতের বালিয়াড়িতে; ঘোড়ায় চড়ছেন, বালিয়াড়িতে আলপনা এঁকেছেন।
পটুয়াখালীর বাসিন্দা ফয়েজ আহমেদ চাকরির কারণে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে পরিবার নিয়ে থাকেন। ছুটিতে বাড়ি যাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে ছুটি উপভোগ করতে ঈদের একদিন আগেই কক্সবাজার ঘুরতে এসেছেন বলে জানালেন।
মুন্সিগঞ্জ থেকে ঈদের একদিন আগে পরিবার নিয়ে ছুটি কাটাতে কক্সবাজার এসেছেন ব্যবসায়ী মো. কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, মহামারী ও ব্যবসায়িক ব্যস্ততার কারণে গত দুই বছর স্ত্রী সন্তানদের কোথাও বেড়াতে যাওয়া হয়নি। এখন পরিস্থিতি উন্নতি হওয়ায় ঈদের টানা ছুটিতে কক্সবাজার বেড়াতে আসার সুযোগ মিলেছে। পরিবার ছাড়া ভিন্ন পরিবেশে প্রথমবারের মতো ঈদ উদযাপন করার
ভিন্ন অনুভূতি নিয়ে শুক্রবার কক্সবাজার ছাড়বেন বলে জানান তিনি।
এদিকে মহামারীর ধকল কাটিয়ে পর্যটন ব্যবসায় চাঙ্গাভাব ফিরবে বলে আশা হোটেল ব্যবসায়ী নেতা মুকিমের। তিনি বলেন, 'বুধবার থেকে কাঙ্ক্ষিত পর্যটক কক্সবাজার ঘুরতে আসবেন। পর্যটকদের এ আনাগোনা আগামী শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। আশা করছি, এই সময়ে অন্তত পাঁচ লক্ষাধিক পর্যটক সমাগম ঘটবে। করোনা মহামারীর কারণে গত দুই বছর ঈদের ছুটিতে পর্যটক না আসায় পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছিল। এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পাশাপাশি টানা প্রায় এক সপ্তাহ ছুটি থাকায় সেই ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।'
কক্সবাজার ভ্রমণে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তা ও সেবা দিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে স্থাপন করেছে অস্থায়ী 'হেল্প ডেস্ক'।