সড়ক দুর্ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নিহত: উপাচার্য বরাবর শিক্ষার্থীদের ১০ দফা দাবি
সড়ক দুর্ঘটনায় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী মাইশা ফৌজিয়া মিম নিহতের ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। একই সাথে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বুধবার (৩০ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ভিসি ভবনে উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের সাথে দেখা করে ১০ দফা দাবি জানান।
উল্লেখ্য, কুয়াকাটা থেকে বরিশালগামী নারায়ণগঞ্জ ট্রাভেলস পরিবহনের বাসের চাপায় মাইশা ফৌজিয়া মিম মৃত্যুবরণ করেন। বুধবার (৩১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভোলার মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল মেট্রোপলিটন বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, "ওই শিক্ষার্থী হাত উঁচু করে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়িটি এসে তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।"
এদিকে মাইশার মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীরা গতকাল মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রবিউল ইসলাম জানান, "মাইশাকে চাপা দেওয়ার পরে গাড়িটি না থামিয়ে দ্রুত চালিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে শিক্ষার্থীরা গাড়িটিকে ধাওয়া দিয়ে দপদপিয়া সেতুর টোল প্লাজায় আটক করে। যদিও বাস চালক ও হেলপার পালিয়ে গেছে।"
তিনি আরও বলেন, " শিক্ষার্থীরা বাসটি আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিয়ে আসে। বিক্ষুব্ধরা গাড়িটি ভাংচজুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়।"
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, "শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আমরা শোকস্তব্ধ। বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ধরনের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম ও অফিস কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছেন উপাচার্য।"
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত দাবি উপাচার্য মেনে নিয়েছেন উল্লেখ করে রেজিস্ট্রার বলেন, "গাড়ির চালক ও হেলপারকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। এছাড়া সড়কে স্পিডব্রেকার স্থাপন করা হবে।"
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, "উপাচার্য আমাদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা আপাতত সড়ক ছেড়েছি। তবে সকাল ১০টা [আজ] থেকে আবার সড়ক অবরোধ শুরু করবো। দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখলে কঠোর আন্দোলনের দিকে যাবো।"
উত্থাপিত ১০ দফা দাবিগুলো হলো: বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার মধ্যে মাইশা নিহতের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা, নিহতের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, বাসের চালক-হেলপারকে গ্রেপ্তার করে গণমাধ্যমে প্রচার করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে গাড়ি চলাচলে গতিসীমা নির্ধারণ, স্পিড সেন্সর স্থাপন, বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালের অবস্থা উন্নতিকরণ, অ্যাম্বুলেন্সের সুবিধা বাড়ানো, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের সকল সড়ক মেরামত করা এবং ট্র্যাফিক পুলিশ নিযুক্ত করা।