পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যের কায়িক পরীক্ষার শর্ত প্রত্যাহার
দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়ের সুবিধার্থে পাকিস্তান থেকে আমদানি করা সকল পণ্যের ওপর থেকে বাধ্যতামূলক শতভাগ ফিজিকাল এক্সামিনেশন বা কায়িক পরীক্ষার শর্ত প্রত্যাহার করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআর সূত্র জানায়, পাকিস্তান ছাড়া অন্য কোনো দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে এই মানদণ্ড প্রযোজ্য ছিল না। এই শর্ত প্র্যাহারের ফলে এখন অন্যান্য দেশ থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ক্ষেত্রে ঝুঁকি বিবেচনায় যেভাবে পরীক্ষা করা হয়, পাকিস্তান থেকে আমদানির ক্ষেত্রেও একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাজস্ব বোর্ডের জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এনবিআরের সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত সব পণ্যের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে শতভাগ ফিজিক্যাল এক্সামিনেশনের নিয়ম প্রযোজ্য ছিল, এতে করে এ কাজের জন্য বাড়তি লোকবল ডেপ্লয় (নিয়োগ) করতে হতো। কিছু পণ্য রয়েছে, যেগুলো সাধারণত ফিজিক্যাল এক্সামিনেশন করতে হয় না। কিন্তু পাকিস্তান থেকে আসা ওইসব পণ্যও পরীক্ষা করতে হচ্ছিল, যদিও সেখানে কোনো অনিয়ম পাওয়া যায়নি।"
"এতে প্রতিটি পণ্য চালানে বাড়তি দুইদিন সময় লাগতো। কাস্টমসের যেমন বাড়তি লোকবল প্রয়োজন হতো, ব্যবসায়ীদেরও বাড়তি সময়ের পাশাপাশি ব্যয় বাড়তো," বলেন তিনি।
ব্যবসায়ীরা এনবিআরের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা বলছেন, পাকিস্তান থেকে আমদানি করা পণ্যে শতভাগ কায়িক পরীক্ষার এই শর্ত থাকায় ব্যবসায়ীদের খরচ ও সময় বেশি লাগছিল— যা 'ইজ অব ডুয়িং বিজনেস' এর পরিপিন্থী।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম টিবিএসকে বলেন, "এই পদক্ষেপ ইজ অব ডুয়িং বিজনেসের অংশ। যেহেতু অনিয়ম পাওয়া যায়নি, তাহলে শতভাগ ফিজিক্যাল এক্সামিনেশনের নামে সময় ও ব্যয় বাড়ানো উচিত নয়। এনবিআর সেই কাজটিই করেছে, এটিকে আমরা সাধুবাদ জানাই।"
২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশের আমদানি ছিল৬৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি, যার মধ্যে পাাকিস্তান থেকে আমদানি ছিল ৬৯৯ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। আর রপ্তানি ছিল ৭৪ মিলিয়ন ডলারের মত। আমদানিকৃত পণ্যের মধ্যে বেশিরভাগিই গার্মেন্টসের কাঁচামাল।
পাকিস্তান বিজনেস কাউন্সিলের তথ্য অনুসারে— কটন ছাড়াও পাকিস্তান থেকে আমদানিকৃত পণ্যের তালিকার মধ্যে রয়েছে— লবণ, সালফার, পাথর, প্লাস্টারের উপকরণ, চুন, ভোজ্য শাকসবজি, কাঁচা চামড়া, যন্ত্রপাতি, অজৈব রাসায়নিক, ম্যানমেড ফাইবার, প্লাস্টিক, ট্যানিং বা ডাইং এক্সট্র্যাক্ট, এবং ভোজ্য ফল ও বাদাম।