সেনাবাহিনীর পাশাপাশি ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা পেলেন বিমান ও নৌবাহিনীর কর্মকর্তারা
সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বাংলাদেশ বিমান ও বাংলাদেশ নৌবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদেরকেও এখন থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল (২৯ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আগের একটি প্রজ্ঞাপন সংশোধন করে নতুন এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ৬০ দিনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেয় সরকার।
এখন সংশোধিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এ ক্ষমতা বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদেরও (সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন ও তদুর্ধ্ব সমপদমর্যাদার) দেওয়া হয়েছে।
সশস্ত্র বাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারদের এ ক্ষমতা দেওয়ার অর্থ হচ্ছে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি বিমান ও নৌবাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত অফিসারেরাও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সশস্ত্র বাহিনীর তিন বাহিনীর কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এসব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে সারাদেশে দায়িত্ব পালন করবেন।
তারা ফৌজদারি কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৬৪, ৬৫, ৮৩, ৮৪, ৮৬, ৯৫(২), ১০০, ১০৫, ১০৭, ১০৯, ১১০, ১২৬, ১২৭, ১২৮, ১৩০, ১৩৩ ও ১৪২ ধারার অপরাধ বিষয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।
নতুন প্রজ্ঞাপনে এসব বিষয় অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
ফৌজদারি কার্যবিধিতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা গ্রেপ্তারের আদেশ দিতে পারেন। তারা জরিমানা করা, কারাদণ্ড দেওয়ার মতো বিভিন্ন বিচারকার্যও করতে পারেন।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়লে গত ১৯ জুলাই দিবাগত রাতে সারাদেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও কারফিউ জারি করেছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
এরপর ছাত্র–জনতার গণঅভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। তিনদিনের মাথায় ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়।
এদিকে, গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে সারাদেশে যৌথবাহিনীর অভিযান শুরু হয়।
সরকার পতনের পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশৃঙ্খলা চলছে। বিভিন্ন খাতের কর্মীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন এবং অনেকে তাদের দাবি আদায়ের উদ্যোগ নিচ্ছেন।
স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে জোর করে শিক্ষকদের পদত্যাগ ঘটানোর বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। অনেক জায়গায় বিক্ষুদ্ধ জনগণ আটককৃত আসামিদের ওপর হামলা করেছেন। শ্রমিকেরা কলকারখানায় ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করেছেন।
মাজার ভাঙচুর, মন্দিরে হামলাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় স্থাপনায় হামলার ঘটনাও ঘটছে। এসব ঘটনা বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানানো হলেও তা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি।