সাইবার নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় গ্রেপ্তার না করতে বলা হয়েছে: নাহিদ ইসলাম
সাইবার নিরাপত্তা আইনে এখন যে মামলাগুলো হচ্ছে সেই মামলাগুলোয় কোনো পদক্ষেপ না নিতে ও কাউকে গ্রেপ্তার না করতে আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গতকাল (শুক্রবার) ডয়েচেভেলেকে এমনটাই জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।
ইতিমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারের দেড় মাসে সাইবার নিরাপত্তা আইনে কয়েকটি মামলা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানকে নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে কটূক্তি করার অভিযোগেও মামলা হয়েছে।
নহিদ ইসলাম জানান, নিবর্তনমূলক যে আইনগুলো আছে, যেগুলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় বাধা দেবে, সেগুলো বাতিল অথবা সংশোধন করা হবে। এক্ষেত্রে সাইবার নিরাপত্তা আইনটিও পর্যালোচনার মধ্যে রয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেন, "যারা মামলা করেছেন তাদের আমরা চিনি না। আমরা নিরুৎসাহিত করছি। একটি মামলা তো ধর্ম অবমাননার কথা বলে করা হয়েছে। আমাদের নামগুলো সাথে যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এই মামলাগুলো আমাদের বিব্রত করতে করা হচ্ছে কি-না এটাও আসলে আমাদের একটু দেখতে হবে।"
সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্ট্যাডিজ বলছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মোট এক হাজার ৩৬টি মামলা হয়েছে তৎকালীন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে, যা পরবর্তীতে সাইবার নিরাপত্তা আইনে পরিণত হয়৷ তাতে আসামি করা হয়েছে চার হাজার ৫২০ জন৷ তারমধ্যে এক হাজার ৫৪৩ জনের পেশাগত পরিচয় পাওয়া গেছে৷ দুই হাজার ৯৮৬ জনের পেশাগত পরিচয় পায়নি সেন্টার ফর গভর্নেন্স স্ট্যাডিজ৷
যাদের পেশাগত পরিচয় জানা গেছে তাদের মধ্যে রাজনৈতিক নেতারাই সংখ্যায় বেশি, ৪৯৫ জন৷ তারপরই রয়েছে সাংবাদিক ৪৫১ জন৷ এছাড়া সরকারি চাকুরে, চিকিৎসক, এনজিওকর্মী, আইনজীবী, ছাত্র, শিক্ষকর রয়েছেন৷
শতাংশ হিসাবে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ৩২.২৭ শতাংশ এবং সাংবাদিক ২৯.৪ শতাংশ৷ এইসব মামলায় আসামিদের মধ্যে ২৮ জন আছেন যাদের বয়স ১৮ বছরের নিচে৷
মামলায় এক হাজার ৫৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে ১৪৩ জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, ছাত্র ১০৪ জন এবং সাংবাদিক ৯৭ জন৷
মামলা দায়েরকারীদের মধ্যে শীর্ষে আছে র্যাব, পুলিশ, সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতা৷ ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের নেতারাই সবচেয়ে বেশি মামলা করেছেন, ৩৩৪টি৷
যেসব রাজনৈতিক লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তারা প্রায় সবাই বিরোধী নেতা-কর্মী৷ এইসব মামলায় শাস্তি হয়েছে খুবই কম৷ তারপরও জেলে থাকতে হয়৷ হয়রানির শিকার হতে হয়৷ এই মামলার আসামি লেখক মুশতাক আহমেদ ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি কারাগারেই মারা যান৷