পূর্বাচলে হাসিনার পরিবার ও আওয়ামী লীগ নেতাদের প্লট বাতিলের দাবি স্থানীয়দের
পূর্বাচল প্রকল্প এলাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বরাদ্দকৃত প্লট বাতিলের দাবি জানিয়েছেন পূর্বাচলের স্থানীয় বাসিন্দারা।
'পূর্বাচল ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দা পুনর্বাসন সমন্বয় কমিটি'-এর ব্যানারে গতকাল (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা এবং সেখানে তারা ১৯ দফা দাবি তুলে ধরেন।
আন্দোলনকারীরা প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলেন এবং আবেদনকারীদের মধ্যে ন্যায়সংগত ও নিরপেক্ষভাবে প্লট বণ্টনের আহ্বান জানান।
শতাধিক মানুষ মানববন্ধনে অংশ নেন এবং রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন।
তাদের দাবি: পূর্বাচলের মূল বাসিন্দা ও ক্ষতিগ্রস্তদের যারা আগে প্লটের জন্য আবেদন করতে পারেননি, তাদেরকে নতুন করে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া। এছাড়া, যারা প্রথমে প্লটের জন্য আবেদন করেছিলেন কিন্তু জমি বরাদ্দ পাননি, তাদের প্লট বরাদ্দের দাবি জানান তারা।
তাছাড়া, পূর্বাচলে গত ১৭ বছরে ভবন, স্টেডিয়াম এবং সড়ক নির্মাণে সংঘটিত দুর্নীতির তদন্তের দাবি জানিয়ে, দোষীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান তারা। একইসঙ্গে, এলাকা দ্রুত বসবাসের উপযোগী করার জন্য কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান তারা।
কমিটির সমন্বয়ক দুলাল হোসেন বলেন, পাঁচ কাঠার প্লটের জন্য হাজার হাজার মানুষের কাছ থেকে ৩০,০০০ টাকা সংগ্রহ করা হয়েছিল। "আমরা দুটি কিস্তি জমা দিয়েছি, কিন্তু আমাদের পাঁচ কাঠার প্লট তিন কাঠায় নামিয়ে আনা হয়েছে। আমরা আগের দামে মূল পাঁচ কাঠার প্লট দাবি করছি।"
তিনি আরও বলেন, "গত সরকার ১ হাজার ৪০০ প্লট বরাদ্দ করেছে, যার মধ্যে অনেকগুলো অবৈধ উপায়ে হয়েছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে, আওয়ামী লীগের মধ্যস্থতাকারীরা এক নামে একশ থেকে দুশ প্লট বরাদ্দ করেছে। এসব প্লট বাতিল করতে হবে।"
রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সিদ্দিকুর রহমান সরকার বলেন, "আগামী শনিবার থেকে আমি ও আমার কর্মকর্তারা পূর্বাচলে কাজ শুরু করব। প্রতি শনিবার আমি সেখানে অফিস করব। ধীরে ধীরে আপনারা অভিযোগ নিয়ে আসবেন, আমরা সবার কথা শুনব এবং কোনো অনিয়ম পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেব।"
তিনি আরও বলেন, "বিষয়গুলো পর্যালোচনার জন্য আমরা চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছি।"
রাজউক ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী, পূর্বাচল নিউ টাউন দেশের সবচেয়ে বড় পরিকল্পিত শহর, যেটি মোট ৬ হাজার ২১৩ একর জমির ওপর বিস্তৃত। প্রকল্পটি ঢাকা শহরের উত্তর-পূর্ব দিকে, নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ থানা, গাজীপুরের কালীগঞ্জ এলাকা এবং শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।