ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তোফাজ্জল হত্যা: সাবেক প্রাধ্যক্ষসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল নামক মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় হলটির সাবেক প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের আদালতে তোফাজ্জলের ফুফাতো বোন আসমা আক্তার এ মামলাটি করেন।
মামলার বিষয়টি গণমাধ্যমের কাছে নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী নাজমুল হাসান।
এ ঘটনায় শাহবাগ থানায় ইতোমধ্যেই আরেকটি মামলা থাকায় নতুন মামলার তদন্ত আপাতত স্থগিত থাকবে বলে আদালত আদেশ দিয়েছেন।
আদালত শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলাটি তদন্ত করে আগামী ২৫ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, আগের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর এ আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা চলবে কি না, তা আদালত পরে সিদ্ধান্ত নেবেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, মোত্তাকিন সাকিন শাহ, আল হোসাইন সাজ্জাদ, ওয়াজিবুল আলম, আহসান উল্লাহ, ফজলে রাব্বি, ইয়ামুস জামান, রাশেদ কামাল অনিক, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান ও মো. সুলতান।
তারা সবাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।
এর আগে ২১ সেপ্টেম্বর ঘটনার সময় হলের প্রাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. শাহ মুহাম্মদ মাসুমকে পরিবর্তন করে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে নতুন প্রাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়।
একইসঙ্গে হত্যার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অভিযুক্ত আটজনকে সাময়িক বহিষ্কার এবং তাদের আবাসিক সিট বাতিল করে হল প্রশাসন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে ফজলুল হক মুসলিম হলের গেইটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন তোফাজ্জল। তখন কিছু ছাত্র তাকে আটক করে প্রথমে হলের ভেতর নিয়ে যান। এরপর মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগ এনে তাকে মারধর করেন।
এক পর্যায়ে তাকে হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়। এরপর আবারও তাকে মারধর করা হয়।
খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষক তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাত পৌনে ১টায় চিকিৎসকেরা ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন এ ঘটনায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামি করে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ (৩২)।
২০ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন ছয় অভিযুক্ত। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।