ভোটার তালিকা প্রস্তুত হলে নির্বাচনের ঘোষণা আসবে: আইএমএফ’র প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে ড. ইউনূস
বাংলাদেশের সংস্কার উদ্যোগে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা। তিনি বলেন, এ বিষয়ে অংশীদারদের সঙ্গে আলোচনার জন্য ঢাকায় একটি দল পাঠিয়েছে ওয়াশিংটনভিত্তিক ঋণদাতা সংস্থাটি।
গতকাল মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদর দপ্তরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনের ফাঁকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করেন আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।বৈঠকে তিনি বলেন, "আইএমএফ বাংলাদেশের প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে এবং টেকসই ও ন্যায়সংগত প্রবৃদ্ধির জন্য সংস্কার অ্যাজেন্ডা এগিয়ে নিতে সহায়তা অব্যাহত রাখবে।"
বাংলাদেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে অধ্যাপক ইউনূসের কাজের প্রশংসা করেন আইএমএফ প্রধান।
স্বৈরাচারী শাসক উৎখাতে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গণঅভ্যুত্থান সংক্রান্ত বিষয় সংক্ষেপে ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার কাছে তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস। এ বিষয়ে জর্জিয়েভা বলেন, "এ এক অন্য দেশ। এটা বাংলাদেশ ২.০।"
নির্বাচন, বেসামরিক প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন ও সংবিধান বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের সুপারিশ করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে ছয়টি কমিশন গঠন করেছে সে সম্পর্কে আইএমএফ প্রধানের কাছে তুলে ধরেন অধ্যাপক ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং সূত্রে জানা গেছে, কমিশনগুলোর সুপারিশ নিয়ে সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে। সংস্কারের বিষয়ে ঐকমতে পৌঁছানো গেলে এবং ভোটার তালিকা প্রস্তুত হলে ভোটের তারিখ ঘোষণা করা হবে।
এসব উদ্যোগের বিষয়ে সমর্থন ব্যক্ত করেন আইএমএফের প্রধান নির্বাহী। আইএমএফ এই সরকারকে দ্রুত আর্থিক সহায়তা দেবে বলে জানান তিনি।
জর্জিয়েভা বলেন, আইএমএফের একটি দলকে 'দ্রুত' বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন তিনি এবং এটি বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছে। আগামী মাসে আইএমএফ পরিচালনা বোর্ডে দলটি এ সফর নিয়ে প্রতিবেদন উপস্থাপন করবে।
জর্জিভা বলেন, এই দলের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইএমএফ বোর্ড বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন ঋণ কর্মসূচি শুরু করতে পারে। অথবা গত বছরের শুরুতে চালু হওয়া বিদ্যমান সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আরও ঋণ দিতে পারে বলে জানান তিনি।
এসময় বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন জ্বালানি ও বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান আইএমএফ প্রধানকে বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে অপরাধের কাঠামো ভেঙে দিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাত্র এক সপ্তাহ সময় নিয়েছে।
দেশের ব্যালেন্স অব পেমেন্ট জোরদার করতে আইএমএফের সহায়তার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন ড. দেবপ্রিয়। তিনি বলেন, বিনিময় হার স্থিতিশীল করতে আইএমএফের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হবে।