১১২ দিন পর ক্লাসে ফিরলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
অবশেষে ১১২ দিন বন্ধ থাকার পর ক্লাসে ফিরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সাড়ে তিন মাস পর আজ বেশিরভাগ বিভাগে ক্লাস হয়েছে।
আজ রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল সকাল ১০টার দিকে ক্লাস শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীরা এতদিন ক্লাস ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে ফিরে যাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিলেন।
স্নাতক প্রথম বর্ষ ছাড়া বাকি সব বর্ষের ক্লাস শুরু হয়েছে আজ
স্নাতক প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু হবে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর।
আজ ক্লাস শুরুর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয় এবং শান্তির প্রতীক কবুতর ওড়ানো হয়।
সাড়ে তিন মাস পর ক্লাসে ফেরার অনুভূতি জানিয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছৈয়দ মোছাদ্দেকুন নবী টিবিএসকে বলেন, 'সরকার পতনের পর সব চালু হতে কিছু সময় লাগবে, সেটা আঁচ করতে পারলেও ক্লাস শুরু হতে যে এতদিন সময় লাগবে তা কল্পনাও করতে পারিনি। অনার্সের শেষ বর্ষ ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন সম্ভবত সেটা আর হচ্ছে না।'
তিনি বলেন, 'পুনরায় ক্লাসে ফিরে এসে বেশ ভালো লাগছে। সবাইকে একসাথে দেখছি। নতুন বাংলাদেশে আরও ভালো শিক্ষার মান ও পরিবেশ দীর্ঘ দুই মাসের এই ক্ষতি পুষিয়ে দেবে বলে আশাবাদী।'
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গতকাল (২১ সেপ্টেম্বর) ১০টি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে। এ সময় কর্তৃপক্ষ তাদের কাছ থেকে ক্যাম্পাসে পড়াশোনার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে সাহায্য চায়।
বৈঠকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন ছাত্রসংগঠনের নেতারা।
তারা যথাসময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও অন্যান্য হল ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।
উল্লেখ্য, ঈদুল আজহার আগে গত ২ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটি শুরু হয়। ছুটির পর ১ জুলাই ক্লাস শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সর্বজনীন পেনশনের 'প্রত্যয়' স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে ওইদিন থেকে সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা।
অন্যদিকে জুলাইয়েই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আলাদা আন্দোলনে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।
এরপর শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন দমাতে দমন-পীড়নের শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকার। পরে গত ১৭ জুলাই দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় নিরাপত্তার আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল খালি করতে বলে।