স্বাভাবিক রয়েছে আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলের পরিস্থিতি, বন্ধ ১৬টি কারখানা
দুই সপ্তাহের শ্রমিক অসন্তোষের পর ঢাকার আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে এসেছে। সপ্তাহের প্রথম দিন আজ শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে অধিকাংশ পোশাক কারখানা খোলা রয়েছে এবং শ্রমিকরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন।
পুলিশ ও শিল্পসূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও কিছু কারখানায় সমস্যা রয়ে গেছে, যার ফলে ১৬টি কারখানা এখনো বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩(১) ধারায়, 'নো ওয়ার্ক, নো পে'র ভিত্তিতে ১৩টি এবং ৩টি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম।
যদিও বিজিএমইএ সূত্র জানায়, আজ বন্ধ থাকা কারখানার সংখ্যা ১৪টি, এর মধ্যে শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় ৯টি এবং কারখানা খোলার পর কাজ বন্ধ আছে কিংবা ছুটি আছে ৫টি কারখানায়।
শিল্প পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছে, বন্ধ থাকা এসব কারখানার মধ্যে শ্রমিকদের বেতন দিতে পারছে না কিংবা কারখানায় কাজ নেই এমন কারখানাও রয়েছে। সারোয়ার আলম বলেন, যেখানে ছোটখাটো সমস্যা দেখা দিচ্ছে অথবা শ্রমিকরা কিছু দাবি তুলছে, সেখানে আমরা আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করছি। বন্ধ থাকা কারখানার মালিক ও বিজিএমইএ-কে অনুরোধ করেছি দ্রুত কারখানাগুলো খুলে দিতে, কারণ শ্রমিকরা কাজ করতে আগ্রহী।
বিজিএমইএ সূত্রে জানানো হয়েছে, আশুলিয়ায় শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় আজ বন্ধ থাকা কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে রেডিয়েন্স ফ্যাশন, রেডিয়েন্স জিন্স, কমফিট কম্পোজিট লিমিটেড, জেনারেশন নেক্সট, এবং আঞ্জুমান ডিজাইন লিমিটেড।
অন্যদিকে, স্ব-বেতনে (লিভ উইথ পে) ছুটিতে থাকা অথবা শ্রমিকরা চলে গেছে এমন ৫টি কারখানা হলো: মেডলার অ্যাপারেলস, সেতারা গ্রুপ, ব্যান্ডো ডিজাইন, দ্য রোজ ড্রেসেস লিমিটেড এবং সুসুকা নীট লিমিটেড।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড সোয়েটার শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের আইন বিষয়ক সম্পাদক খায়রুল মামুন মিন্টু দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "শিল্পাঞ্চলের সার্বিক পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি করলেও কিছু জায়গায় এখনো সমস্যা রয়ে গেছে। আমরা বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ের খবর পাচ্ছি, পাশাপাশি মামলা দায়েরের ঘটনাও উদ্বেগজনক।
তিনি আরও বলেন, আমরা মালিকপক্ষের কাছে অনুরোধ করব কোনো কারখানায় যেন অন্যায়ভাবে শ্রমিক ছাঁটাই না করা হয়, একইসাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি অনুরোধ যেন শ্রমিক অসন্তোষের জেরে দায়ের করা মামলাগুলোতে কোনো নিরীহ শ্রমিককে হয়রানি না করা হয়। পাশাপাশি, মালিকপক্ষের কাছে আহ্বান, শ্রমিকদের যে দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, তা যেন বাস্তবায়িত হয়।
দুপুর ১টা পর্যন্ত শিল্পাঞ্চলের কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি। শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় বিভিন্ন কারখানার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েনসহ শিল্পাঞ্চলে যৌথ বাহিনীর টহল কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।