৪৫ শতাংশ পর্যন্ত লোডশেডিং: অতিষ্ঠ জনজীবন, ব্যাহত হচ্ছে শিল্প, কল-কারখানার উৎপাদন
গত কয়েকদিন ধরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকা সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই এবং গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকার বাসিন্দারা।
অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে এ অঞ্চলের শিল্প-কারখানাগুলোতে উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সূত্র বলছে, সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) এই অঞ্চলে লোডশেডিংয়ের মাত্রা ৪৫ শতাংশে পৌঁছেছে।
পল্লী বিদ্যুৎ-১-এর সূত্র জানায়, বিদ্যুতের সরবরাহ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কম থাকায় তারা দিনে ১০-১২ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছেন না।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক মোল্লা মো. আবুল কালাম আজাদ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'সোমবার দুপুরে আমাদের আওতাধীন এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা ছিল ৩১৩ মেগাওয়াট, কিন্তু সরবরাহ ছিল মাত্র ১৭০ মেগাওয়াট।'
এ সমিতির আওতায় শিল্প ও আবাসিক মিলিয়ে পাঁচ লাখেরও বেশি গ্রাহক রয়েছেন।
অন্যদিকে, ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর সিনিয়র মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মো. মাশফিকুল হাসান টিবিএসকে বলেন, আজ দুপুরে তাদের চাহিদা ছিল ৪২৫ মেগাওয়াট, বিপরীতে সরবরাহ ছিল মাত্র ৩০৬ মেগাওয়াট।
কখনো কখনো লোডশেডিংয়ের পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঢাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর আওতায় প্রায় সাত লাখ গ্রাহক রয়েছেন, যার মধ্যে ৬.২৫ লাখই আবাসিক গ্রাহক বলে জানান এ কর্মকর্তা।
পল্লী বিদ্যুৎ সূত্র জানায়, গত এক সপ্তাহ ধরেই তারা লোডশেডিংয়ের সম্মুখীন হচ্ছেন, আর গত ৩-৪ দিন ধরে এটি চরম মাত্রায় পৌঁছেছে।
পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠান ফ্যাশন গ্লোব গ্রুপের কোম্পানি সচিব র্যাক লিটন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, দিনের অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না তারা। বাধ্য হয়ে জেনারেটর দিয়ে কারখানায় উৎপাদন চালিয়ে যেতে হচ্ছে তাদের।
তিনি আরও বলেন, 'জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন চালু রাখতে গিয়ে উৎপাদন খরচ কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে।'
চামড়া খাতের সদর ট্যানারির মালিক মাসুদ চৌধুরী টিবিএসকে বলেন, '৪-৫ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে। জেনারেটর দিয়ে উৎপাদন চালিয়ে যেতে হচ্ছে, এতে উৎপাদন ব্যয় ২০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে যাচ্ছে।'
সাভারের নামাগেন্ডা এলাকার বাসিন্দা শামীমা আক্তার বলেন, 'দিনে গড়ে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। একদিকে প্রচণ্ড গরম, তার উপর এত লোডশেডিং, বাচ্চাদের লেখাপড়ারও ক্ষতি হচ্ছে।'
'একবার বিদ্যুৎ গেলে ২ ঘণ্টার আগে ফিরে আসে না, সারাদিনই এমন চলছে,' যোগ করেন তিনি।
আশুলিয়ার পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার বাসিন্দা শামসুজ্জোহা মিঠু বলেন, 'দিনে এক ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকলে, এক ঘণ্টা থাকে না। গড়ে দিনের অর্ধেক সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না, গভীর রাতেও লোডশেডিং হচ্ছে।'
তিনি জানান, গত এক সপ্তাহ ধরেই তারা এ পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন।