অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন ও ঢাকার সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করবে যুক্তরাষ্ট্র
যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন অব্যাহত রাখবে, একইসাথে বিভিন্ন বিষয়ে ঢাকার সাথে সম্পর্ক জোরালো করবে। আজ সোমবার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে সাক্ষাৎ করে একথা বলেছেন ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স (সিডিএ) হেলেন লাফেভ।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি–বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
হেলেন লাফেভ বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে অভিনন্দন জানাতে পেরে যুক্তরাষ্ট্র আনন্দিত, আগামীতে আমরা ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুততর করতে এই সপ্তাহ থেকেই কনস্যুলার সেবা চালু করবে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। বর্তমানে হাজার হাজার বাংলাদেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা করছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শ্রম, সুশাসন ও রোহিঙ্গাসহ নানান ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র এই সরকারের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে বলেও জানান হেলেন লাফেভ।
রোহিঙ্গাদের বিষয়ে মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছেন, রোহিঙ্গাদের যুক্তরাষ্ট্রে পুনর্বাসন শুরু করা হয়েছে, খুব শিগগিরই এই প্রক্রিয়ায় গতি আনা হবে।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গাদের সর্ববৃহৎ মানবিক সহায়তা প্রদানকারী হলো যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি আরও তহবিল বরাদ্দ দেওয়ায় এবছরে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসিক খাদ্য সহায়তার পরিমাণও বেড়েছে। এসময় রোহিঙ্গাদের জন্য জীবিকানির্বাহের সুযোগ সৃষ্টির আহ্বান জানান হেলেন লাফেভ।
প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের জন্য তহবিল প্রদানসহ নানান বিষয়ে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর গভীর সংস্কারের দায়িত্ব রয়েছে, এবং একটি যৌক্তিক সময়ের পরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এসময় বাংলাদেশে বন্যার্তদের সহায়তাকারী পক্ষগুলোকে 'অভিন্ন প্ল্যাটফর্ম' প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে 'সমন্বিত' উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বৈঠকে হেলেন লাফেভ বাংলাদেশে শ্রম ও সংখ্যালঘুদের বিষয়ে কিছু উদ্বেগ তুলে ধরেন।
প্রধান উপদেষ্টা তাঁকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, দেশের প্রতিটি নাগরিক সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত এবং অন্তর্বর্তী সরকার সব নাগরিকের মানবাধিকার সমুন্নত রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মানবাধিকার ইস্যু, সাইবার নিরাপত্তা আইন এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন- র্যাবের প্রসঙ্গও আলোচনার সময় উঠে এসেছে।
মার্কিন চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স বলেছেন, তার সরকার ন্যায্যবিচার নিশ্চিত করার প্রয়াসে বাংলাদেশকে একটি প্রসিকিউটরিয়াল সার্ভিস গঠনে সহায়তা করার চেষ্টা করছে।