মাধ্যমিকে ফিরছে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ
মাধ্যমিক শিক্ষায় আবারও বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ (বিভাগ বিভাজন) চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এছাড়া সংশোধন আনা হবে পাঠ্যবইয়েও। রোববার (১ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আগামী বছর (২০২৫ সালে) যারা নবম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হবে, তাদের জন্য বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ অব্যাহত রেখে নতুন পাঠ্যসূচি প্রণয়ন করা হবে। তারা আগের মতো নবম ও দশম মিলিয়ে দুই শিক্ষাবর্ষে পাঠ্যসূচি শেষ করে ২০২৭ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেবে। এর মাধ্যমে জাতীয় শিক্ষাক্রমের ২০১২ সালের প্রচলিত রীতি পুনঃপ্রবর্তিত হচ্ছে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ ও নতুন পুস্তক মুদ্রণ এবং চলমান মূল্যায়ন পদ্ধতি সংক্রান্ত জরুরি নির্দেশনা বিষয়ক এ পরিপত্রে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ এর বিষয়ে মাঠ পর্যায়ের অভিজ্ঞতা তথা অংশীজনদের অভিমত, গবেষণা ও জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে এই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্য বিষয়বস্তু ও মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে অস্পষ্টতা ও নেতিবাচক ধারণা, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার প্রকট অভাব ইত্যাদি নানাবিধ বাস্তব সমস্যা বিদ্যমান থাকায় ওই শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় মর্মে প্রতীয়মান। এই পরিপ্রেক্ষিতে সার্বিক বিবেচনায় নির্দেশনা প্রদান করা হলো।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত নতুন নির্দেশনায় যেসব গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে:
- প্রাথমিক শিক্ষা স্তরে প্রাক-প্রাথমিক, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী এবং ১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকগুলোর পাণ্ডুলিপি প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জন করে মুদ্রণ করা হবে। শিক্ষণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতেও পরিবর্তন আনা হবে।
- ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির জন্য, বর্তমানে ব্যবহৃত পাঠ্যবই ২০২৪ সালজুড়ে বহাল থাকবে। সংশোধিত পাঠ্যবই ২০২৫ সালে আসবে। ৬ষ্ঠ থেকে ৯ম শ্রেণির প্রতিটির ৬টি অসম্পন্ন বিষয়ভিত্তিক মূল্যায়ন কার্যক্রম আর অনুষ্ঠিত হবে না। ২০২৪ সালের বার্ষিক পরীক্ষা সংশোধিত মূল্যায়ন রূপরেখার ভিত্তিতে আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। নতুন মূল্যায়ন কাঠামো শীঘ্রই বিদ্যালয়গুলোতে বিতরণ করা হবে।
- ২০২৫ সালে ১০ম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা (২০২৬ সালের অনুষ্ঠাতব্য পরীক্ষা) নেওয়ার লক্ষ্যে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা অব্যাহত রাখা হবে। পাঠ্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য পাঠ্যসূচির সংক্ষিপ্ত সংস্করণ প্রবর্তন করা হবে যাতে তারা ২০২৬ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারে।
এছাড়া পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে— শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিষয় বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় ২০২৫ সালের সংশোধিত পাঠ্যক্রমটি চূড়ান্ত করা হবে, যা ২০২৬ সাল থেকে পরিপূর্ণরূপে কার্যকর হবে।