খুলনায় আ.লীগের সব শক্ত স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বীদের মনোনয়ন বাতিল
খুলনার ৬টি আসনের মধ্যে তিনটি আসনের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। তিন আসনের ৩৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনের মনোনয়ন বাতিল করেছে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে এই তিন আসনের আওয়ামী লীগের তিন শক্ত স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বীরও মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা খন্দকার ইয়াসির আরেফিন মনোনয়নপত্র বাতিলের ঘোষণা দেন।
প্রার্থীদের সমর্থনকারী ভোটারদের স্বাক্ষর জাল করা, বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকা, হলফনামায় স্বাক্ষর না থাকা এবং ঋণ খেলাপি হওয়ার কারণে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন খুলনা-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী জুয়েল রানা, আতিকুর রহমান, রেজভী আলম, এইচ এম রওশন জামির, মোত্তজা রশিদী দারা, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনিরা সুলতানা, ইসলামী ঐক্যজোটের রিয়াজ উদ্দিন খান, তৃণমূল বিএনপির শেখ হাবিবুর রহমান।
খুলনা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী ও বর্তমান সংসদ সদস্য আব্দুস সালাম মূর্শেদীর বিপক্ষে শক্তিশালী প্রার্থী হিসেবে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মোত্তজা রশিদী দারা। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও ওই আসনের তিন বারের সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা রশিদী সুজার আপন ভাই।
ভোটারদের স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগে তার মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "ভিত্তিহীন অভিযোগে আমার মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এই নিয়ে আপীল করবো। তবুও ফেরত না পেলে, প্রয়োজনে হাইকোর্টে যাব।"
খুলনা-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আকরাম হোসেন, জাতীয় পার্টির শাহিদ আলম ও ইসলামী ঐক্যজোটের তরিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ কংগ্রেসের এস এম এ জলিলের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও ক্ষমতাসীন দলের বর্তমান সংসদ সদস্য নারায়ন চন্দ্র চন্দ। তার বিপক্ষে লড়ছেন ফুলতলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ফুলতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন। ঋণ খেলাপি হওয়ার অভিযোগে তার মনোনয়নও বাতিল হয়েছে।
এ বিষয়ে তিনি বলেন, "আমার একটি প্রতিষ্ঠান বিক্রি করে দিয়েছি। সেখানের ঋণ নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। এটা আপিল করলেই মনোনয়ন ফিরে পাবো বলে আশা করি।"
খুলনা-৬ জাতীয় পার্টির মো. শফিকুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম রাজু, গাজী মোস্তফা কামাল, জি এম মাহবুবুল আলম, মো. মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর ও মো. অহিদুজ্জামান মোড়লের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।
এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মো. রশীদুজ্জামানের কোনো দলীয় পদ নেই। পূর্বে তিনি পাইকগাছা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্যসচিব ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বিপক্ষে লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ জিএম মাহবুবুল আলম।
তিনি বলেন, "সামান্য ভুলের কারণে মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। মনোনয়ন ফিরে পেতে আপিল করা হবে, তা না হলে উচ্চ আদালতে যাব।"
এদিকে খুলনা জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা খন্দকার ইয়াসির আরেফিন জানান, রোববার খুলনার ৬টি আসনের মধ্যে ৩টি আসনের মনোনয়নপত্র বাছাই করা হয়। এই ৩টি আসনে ৩৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৮ জনের মনোনয়ন বাতিল এবং ১৫ জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।
আগামী সোমবার খুলনা-১, ২ ও ৩ নং আসনের মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে।