ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে পাওয়া বৃদ্ধকে নিয়ে রহস্য আরও ঘনীভূত

এ মাসের শুরুতে ৭০ বছর বয়সী চান মিয়াকে তার ছেলে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে চলে যান বলে জানা যায়। এখন তার সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে।
আর এসব নতুন তথ্য তাকে নিয়ে রহস্যকে আরও ঘনীভূত করেছে।
চান মিয়ার দেওয়া নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের এক ঠিকানায় যোগাযোগ করে কুমিল্লার চান্দিনার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানতে পারেন, প্রায় ১৫ বছর আগে ওই বৃদ্ধ বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হন। সেখানকার মানুষজন আরও জানান, চান মিয়া মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, তারা বেগমগঞ্জের ঠিকানায় চান মিয়ার এক ভাইয়ের সন্ধান পেয়েছেন।
বৃদ্ধের চার সন্তানের সবাই ঢাকায় থাকেন বলে জানা গেছে।
তাপস শীল বলেন, 'তার ভাইয়ের কাছ থেকে আমরা জানতে পারি, ১৫ বছর আগে বাড়ি ছাড়ার সময় চান মিয়ার মানসিক বিকার ছিল। দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফিরে না আসায় পরিবার ও স্থানীয়রা ভেবেছিলেন তিনি মারা গেছেন।'
'যেহেতু তার পরিবারের কেউই এখন এলাকায় থাকেন না, তাই আমরা তাদের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি,' তিনি বলেন। এখনো চান মিয়াকে কেউ খুঁজতে আসেননি বলে তার সম্পর্কে পাওয়া তথ্যগুলোর সত্যতা যাচাই করা যায়নি।
গত ১৪ অক্টোবর কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বড় গোবিন্দপুর স্টেশন এলাকা থেকে আংশিক পক্ষাঘাতগ্রস্ত চান মিয়াকে উদ্ধার করা হয়। রায়হানা ইসলাম রুনা নামক এক সদাশয় পথচারী চান মিয়ার জন্য সাহায্য চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।
প্যারালাইসিসে চান মিয়ার বাম হাত-পা প্রায় অচল — নড়াচড়া করতেও পারছিলেন না তিনি। আশপাশের কিছু লোক তাকে খাবার দিয়েছিলেন।
চান মিয়ার দাবি, তিনি নোয়াখালীর বাসিন্দা এবং তিন ছেলে, এক মেয়ের জনক।
তার ভাষায়, তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। ৬ অক্টোবর তার বড় ছেলে হারুন ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার সময় তাকে মাঝপথে ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে হুইলচেয়ারসহ রেখে চলে যায়।
তিনি প্রায় এক সপ্তাহ মহাসড়কের পাশে সময় কাটান বলে দাবি করেন। পথচারীরা তাকে প্রশ্ন করলে তিনি তার ছেলেদের জন্য অপেক্ষা করছেন বলে জানান।
'ও আমাকে এখানে বসতে বলেছে। শীঘ্রই আসবে ও,' তিনি উত্তর দিতেন।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে হাসপাতালের রেজিস্ট্রারে অভিভাবকের জায়গায় নিজের নাম লিখেন।
চান মিয়ার স্বাস্থ্য বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আরিফুর রহমান বলেন, শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি কয়েকদিনের অবহেলায় তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন।
'তিনি আর কোনো সমস্যায় ভুগছেন কি না তা আমরা পর্যবেক্ষণ করছি।'