রেলপথ উদ্বোধন: ট্রেনে চড়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ্মা পাড়ি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করার পর, পদ্মা সেতু দিয়ে একটি বিশেষ ট্রেনে চড়ে পদ্মা নদী পার হয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী মুন্সীগঞ্জের মাওয়া রেলস্টেশনে এক নাগরিক সমাবেশে দুপুর ১২টা ২৪ মিনিটে সুইচ টিপে ডিজিটালভাবে ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সংযোগের একটি ফলক উন্মোচন করেন। নতুন ট্রেন সার্ভিসটি উদ্বোধনের পর, প্রধানমন্ত্রী তার ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে মাওয়া থেকে একটি বিশেষ ট্রেনযোগে এসে ভাঙ্গা'র ডা. কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে এক মহাসমাবেশে যোগ দেন।
মাওয়া রেলস্টেশনে শেখ হাসিনা ও তার বোন রেহানা দুপুর ১২টা ৫২ মিনিটে দুই নারী টিকিট বিক্রেতার কাছ থেকে তাদের এবং তাদের পরিবারের শিশু সদস্যদের জন্য টিকিট সংগ্রহ করেন। প্রধানমন্ত্রী সবুজ পতাকা নেড়ে ও বাঁশি বাজিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের সাথে দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে ট্রেনে ওঠেন।

ট্রেনটি পদ্মা সেতু পার হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রীকে বাইরের দৃশ্য উপভোগ করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে তাকে আল্লাহ'র কাছে দু'হাত তুলে মোনাজাত করতে দেখা যায়। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যরাও তার সাথে মোনাজাতে অংশ নেন। মাওয়া থেকে ভাঙ্গাগামী ১৪ বগি-বিশিষ্ট বিশেষ ট্রেনে শেখ হাসিনাকে তার সহযাত্রীদের খোঁজ খবর নিতে দেখা গেছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরিবারের সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ছাড়াও, বিভিন্ন পেশার আরও ৫০ জন ট্রেনে ভ্রমণ করেন।
এই ৫০ জনের মধ্যে চারজন মুক্তিযোদ্ধা, চারজন প্রাথমিক ছাত্র, একজন প্রাথমিক শিক্ষক, তিনজন মাদ্রাসার ছাত্র, একজন ইমাম, একজন মাদ্রাসার শিক্ষক, দুইজন জাতিগত সংখ্যালঘু, হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন, একজন বৌদ্ধ, একজন খ্রিস্টান, একজন রিকশাচালক, একজন পুরুষ কৃষক, একজন মহিলা কৃষক, একজন গার্মেন্টস কর্মী, একজন ফেরি চালক, একজন বোটম্যান, একজন মেট্রো-রেল কন্ট্রোলার, একজন টিটিই, একজন লোকো মাস্টার, একজন স্টেশন মাস্টার, একজন পথচারী, একজন বাস চালক, একজন হকার, একজন সবজি বিক্রেতা, একজন পাট মিল শ্রমিক, একজন নার্স, একজন দিনমজুর, একজন জেলা আনসার ও ভিডিপি সদস্য, একজন ভিডিপি সদস্য, একজন পুলিশ সদস্য, একজন ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা, একজন স্কাউট, একজন বিএনসিসি, একজন র্যাব সদস্য, একজন রেলওয়ে পুলিশ সদস্য, একজন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য, নৌবাহিনীর একজন সদস্য, বিমান বাহিনীর একজন সদস্য, বিজিবির একজন সদস্য, কোস্টগার্ডের একজন সদস্য এবং আরএনবি থেকে একজন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১২টা ৫৯ মিনিটে ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা তাকে স্বাগত জানান।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর, শেখ হাসিনা আজ পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় নির্মানাধীন ঢাকা-যশোর ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের ৮২ কিলোমিটার রেল সংযোগ উদ্বোধন করেন।
ঢাকা-ভাঙ্গা রেল রুট আজ উদ্বোধন করা হলেও এ রুটে বাণিজ্যিক ট্রেন সার্ভিস এখনই চালু হচ্ছে না, তবে ট্রেন সার্ভিস শিগগিরই চালু হবে।
এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে বিশেষ ট্রেনের ট্রায়াল রান সম্পন্ন হয়।
গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্প'র আওতায় ঢাকা ও যশোরের মধ্যে রেল সংযোগ নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯,২৪৬.৮০ কোটি টাকা এবং চীনের এক্সিম ব্যাংক ২১,০৩৬.৭০ কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে।