অক্টোবরেই ঘেরাও আন্দোলনে যাচ্ছে বিএনপি

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে অক্টোবর মাসেই সচিবালয়, নির্বাচন কমিশন ভবন, আদালত ইত্যাদি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান ঘেরাও করার পরিকল্পনা করছে বিএনপি। অক্টোবরের মাঝামাঝিতে এই ঘোষণা আসতে পারে বলে বিএনপি সূত্রে জানা গেছে।
বিএনপি সূত্রে জানা যায়, ৮ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত টানা নতুন কর্মসূচি দিচ্ছে তারা। ২০ থেকে ২৪ তারিখ পর্যন্ত পূজার সময় কর্মসূচি দিবে না দলটি। ২৪ তাখের পর থেকেই চূড়ান্ত 'ডু অর ডাই' আন্দোলন করার পরিকল্পনা তাদের।
তখন পর্যায়ক্রমে গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঘেরাওসহ টানা অবস্থান কর্মসূচিতে যেতে পারে বিএনপি।
পাশাপাশি রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের মতো কর্মসূচিও আসতে পারে।
বিএনপির নেতারা জানায়, এ চূড়ান্ত ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণার আগে ১৮ অক্টোবরের দিকে ঢাকায় বড় সমাবেশ করে সরকারকে পদত্যাগের আল্টিমেটাম দিতে পারে বিএনপি।
ঘেরাও আন্দোলনের পরবর্তীতে দেশব্যাপী অবরোধ, ধর্মঘটের মতো দেশ অচল করার কঠোর কর্মসূচি আসতে পারে। সবশেষে পরিস্থিতি বুঝে হরতাল কর্মসূচিতে যাবে বিএনপি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, "সরকারের আচরণের ওপর নির্ভর করবে আমাদের আন্দোলন কতটুকু শান্তিপূর্ণ থাকবে। সরকারের আচরণ কঠোর হলে কর্মসূচিও কঠোর হবে। সরকার পতনের আন্দোলন তো আর প্রচলিত নিয়ম-কায়দা মেনে হয় না। চূড়ান্ত সময়ে মাঠের পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্দোলনের গতিপথ নির্ণয় করা হবে।"
এদিকে চলমান বিএনপির সমাবেশ,রোডমার্চ ইত্যাদি কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের উপস্থিতি ও জনসমাগম বেড়েছে কিছুটা। মামলা-হামলায় নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীরাও সক্রিয় হয়েছেন বলে মনে করছেন বিএনপি নেতারা।
বিএনপি নেতারা জানান, মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পরই বিএনপি কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠাবে না এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসানীতি কার্যকর হচ্ছে- এমন ঘোষণায় নেতাকর্মীরা আরো বেশি চাঙ্গা হয়েছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল টিবিএসকে বলেন, "মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এ ঘোষণা চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনকে অনেক বেশি বেগবান করেছে। চলমান গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সম্পৃক্ত জনগণ ও নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছে।"
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পুরান ঢাকায় এক সমাবেশে বলেছেন, "এক আমেরিকার ভিসা নীতিতে সরকারের মাথা খারাপ হয়ে গেছে। সবিবালয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে, প্রশাসনে উৎকণ্ঠা।''
এদিকে গত ১ অক্টোবর ময়মনসিংহের বগার বাজারে বিএনপির রোডমার্চপূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান বলেন, "আজকে আমরা রাজপথে নেমেছি। সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত না পদত্যাগপত্র জমা দেবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না।"
একই রোডমার্চে স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, "আগামী দিনে আন্দোলন আরও জোরদার হবে। আগামী দিনে এই লড়াই হবে, এই লড়াইয়ে আমাদের জিততে হবে।"