খুন-জখম, হামলা-গ্রেপ্তার করে বিএনপিকে রাজপথ থেকে সরানো যাবে না: মির্জা ফখরুল

সন্ত্রাসী হামলা, খুন-জখম, গ্রেপ্তার করে বিএনপিকে রাজপথ থেকে সরানো যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পল্লবীতে সমাবেশের অনুমতি দেওয়ার পরও সেখানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ কর্মীরা সশস্ত্র হামলা চালায়।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, 'পল্লবী জোনে সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল ডি ব্লকের ঈদগাহ মাঠে। পরে পুলিশ কর্তৃপক্ষ বেলা একটায় মুকুল ফৌজ মাঠে সমাবেশ করার অনুমতি দেয়। যখন আমাদের কর্মী ভাইয়েরা মঞ্চ তৈরি করছিলেন, ঠিক তখনই আওয়ামী সন্ত্রাসীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে আক্রমণ করে। এতে আমাদের প্রায় ৭৫ জন আহত হয়েছেন। পরে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আটজনকে।'
আওয়ামী লীগ একটি সন্ত্রাসী শক্তি এমন ক্ষোভ প্রকাশ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, 'আওয়ামী লীগ একটি গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি, আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের অধিকারকে হরণকারী শক্তি। আওয়ামী লীগ অতীতেও একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল, এখনো তারা একই উদ্দেশ্যে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করতে চায়। আমরা মনে করি, উসকানি দিয়ে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করা, দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করা, বিরোধী দলকে রাজনীতি এবং নির্বাচনী মাঠ থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য তারা এই কাজগুলো করছে।'
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, 'গতকাল (বৃহস্পতিবার) আক্রমণকারীদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের নেতা-কর্মীরা যখন দাঁড়িয়ে থাকেন, তখন তাঁদের সরিয়ে দিতে পুলিশ তাঁদের ওপর লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস এবং শেষে গুলি করে। পুলিশের ভূমিকা হওয়া উচিত নিরপেক্ষ থাকা। কিন্তু পুলিশ পুরোপুরিভাবে তার উল্টোটা করে।'
বৃহস্পতিবার ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপির সমাবেশে হামলার ঘটনার প্রতিবাদে ১৮ সেপ্টেম্বর সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরসহ সব মহানগর, জেলা-উপজেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। ঢাকায় নয়াপল্টনে বেলা তিনটায় এই সমাবেশ হবে।
মিরপুরে সংঘর্ষ, বিএনপির ২২৫ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
রাজধানীর মিরপুরে সমাবেশ ঘিরে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের সঙ্গে বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা করেছে পুলিশ। মামলায় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের ২২৫ নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে। পল্লবী থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেছেন।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে পল্লবী থানায় করা এ মামলায় আসামি হিসেবে ৭৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে আরও ১০০-১৫০ জন। এজাহারে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর আক্রমণের অভিযোগ আনা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মিরপুর-৬ নম্বর সেকশনের মুকুল ফৌজ মাঠে সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি। সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সক্রিয় হলে ত্রিমুখী সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। এ সময় পুলিশ লাঠিপেটা ছাড়াও রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।