তিতাস নদীতে বর্ণাঢ্য নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত

তিতাসের দুই তীরে লাখো মানুষের উচ্ছ্বাস। নদী থেকে আসছে বৈঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। বৈঠার ছন্দে যেন উত্তাল হয়ে উঠেছে শান্ত তিতাস। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস নদীতে এমনই মনোমুগ্ধকর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো বর্ণাঢ্য নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা।
তিতাস নদীতে নৌকাবাইচ ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসীর প্রাণের এক উৎসব। তবে করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর ধরে বন্ধ ছিল এই প্রতিযোগিতা। এবার করোনা পরিস্থিতি তুলনামূলকভাবে স্বাভাবিক হওয়ায় নৌকাবাইচের আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।
জেলা শহরের শিমরাইলকান্দি থেকে মেড্ডা এলাকা পর্যন্ত তিতাস নদীতে নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। বাইচে ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ আশপাশের জেলাগুলো থেকে আসা মোট ১৩টি নৌকা অংশ নেয়।
দীর্ঘদিন পর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে পেরে আন্দোলিত হন সাধারণ মানুষ। বাইচ দেখতে দুপুর থেকে নদীর তীরে ভিড় করতে থাকেন মানুষজন। তাদের দাবি প্রতিবছর যেন এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

আশিকুল আলম নামে এক যুবক বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে বিনোদনের জন্য তেমন কোনো জায়গা নেই। প্রতিবছর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা বিনোদনপ্রেমীদের মনের খোরাক যোগায়। আর তাই টানা দুবছর বন্ধের কারণে এবারের প্রতিযোগিতা নিয়ে উচ্ছ্বাস ছিল একটু বেশি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমির সভাপতি কবি জয়দুল হোসেন জানান, একটি গোষ্ঠির অপপ্রচারে কয়েক বছর নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা বন্ধ ছিল। এতে করে বিনোদনমূলক এ আয়োজন উপভোগ করতে পারেননি সাধারণ মানুষ। তবে এখন আবারও নৌকাবাইচ শুরু হওয়ায় মানুষজন বিনোদন পাচ্ছেন। প্রতিবছর এ প্রতিযোগিতা আয়োজন করার জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, করোনার কারণে বিগত দুই বছর নৌকাবাইচের আয়োজন করা যায়নি। তবে আগামীতে আরও বড় আকারে, বর্ণিলভাবে বাইচের আয়োজন করা হবে।

জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় এবার নদীতে বাইচের নৌকা ব্যতীত অন্য নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। পরে বাইচ শেষে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সংসদ সদস্য উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর ৬০ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিক হাসান উল্লাহ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আনিসুর রহমান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ফাহিমা খাতুন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌরসভার মেয়র নায়ার কবির।