বিয়ানীবাজার পরিত্যক্ত কূপে পুনঃখনন, দৈনিক ৭মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলনের আশা
সিলেটের বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রের পরিত্যক্ত এক নম্বর কূপ পুণঃখননের কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রোডাকশন কোম্পানি লিমিটেড (বাপেক্স), এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ মিলিয়ন ঘন ফুট গ্যাস পাওয়ার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
আজ শনিবার দুপুরে বিয়ানীবাজারে গ্যাসক্ষেত্রের পরিত্যক্ত ওই কূপ খননের কাজ শুরু হয়। এসময় সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলীসহ বাপেক্স ও সিলেট গ্যাসফিল্ডসের উর্ধতন কর্মকর্তরা উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের সূত্রে জানা যায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের আওতাধীন বিয়ানীবাজার গ্যাসেক্ষেত্রে দুটি কূপ রয়েছে। এরমধ্যে ১ নং কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়।
এরপর আবার ২০১৬ সালের শুরুতে উৎপাদন শুরু হয়ে আবার ওই বছরের শেষদিকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা এই কূপে আজ থেকে আবার খনন কাজ শুরু হল।
এই গ্যাস কেন্দ্রের ২ নম্বর কূপ থেকে প্রতিদিন সাত থেকে সাড়ে সাত মিলিয়ন গ্যাস উত্তোলিত হচ্ছে বলে জানান কর্মকর্তারা।
সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, মাসখানেকের মধ্যেই এই কূপ খনননের কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি। এরপর থেকে উৎপাদন শুরু করা যাবে।
"আমাদের ধারণা এই কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ মিলিয়ন ঘনফুটের মতো গ্যাস পাওয়া যাবে। তবে খনন কাজ শেষ হওয়ার আগে নিশ্চিত করে তা বলা যাবে না।"
মিজানুর রহমান বলেন, সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের [এসজিএফল] আওতাধীন গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা-৮, বিয়ানীবাজার-১, ও গোয়াইনঘাট-১০ নং ক'প খনন এবং রশিদপুরে ১টি পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষে এসজিএফলের র্গ্যাস উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া দুটি প্রকল্পের আওতায় বিয়ানীবাজিার ফিল্ড এবং ব্লক-১৩ ও ১৪ এর আ্ওতায় ডুপিটিলা, বাতচিয়া, হারারগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও সিলেট সাউথে ত্রিমাত্রিস সিসমিক জরিপ কাজ সম্পন্নের পথে বলে জানান তিনি।
সিলেট গ্যাসক্ষেত্রের অধীনে আরও তিনটি কুপ খননের কাজ চলছে বলে জানান তিনি। 'এতে ২০২৩ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমান গ্যাস জাতীয় গ্রীডে যুক্ত হবে।'
সবগুলো প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড থেকে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
বাপেক্সের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিয়ানীবাজার ও পার্শ্ববর্তী গোলাপগঞ্জ উপজেলায় একাধিক গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে।
"এই কূপেও গ্যাসের মজুদ রয়েছে। আশা করছি খনন কাজে আমরা সফল হবো এবং গ্যাস পাওয়া যাবে," বলেন ওই কর্মকর্তা।
গ্যাসের জন্য খ্যাতি রয়েছে সিলেটের। ১৯৫৫ সালে সিলেটের হরিপুরে প্রথম গ্যাসের সন্ধান মিলে। এরপর আবিস্কৃত হয়েছে আরও বেশ ক'টি গ্যাসক্ষেত্র। দেশে বর্তমানে ২৮টি আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এসব গ্যাসক্ষেত্রে প্রমাণিত মজুদের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪ টিসিএফ, আরও ৬ টিসিএফ রয়েছে সম্ভাব্য মজুদ।