'শুধু গান গেয়ে পরিচয়'- এর স্রষ্টা গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর নেই
গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন।
পরিবারের সদস্যরা তাঁর মৃত্যুর সংবাদ নিশ্চিত করেছেন। পারিবারিক সূত্রানুযায়ী, 'সকাল ৬.৩০টার দিকে গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে হাসপাতালে আনা হয়। চিকিৎসক বলেন তাঁর পালস মিলছে না। এর কিছুক্ষণ পর চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।'
বিগত কয়েকদিন ধরেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন কিংবদন্তী এই গীতিকার।
দীর্ঘ ৬০ বছরের কর্মজীবনে তিনি রেডিও, টেলিভিশন ও সিনেমার জন্য অসংখ্য গান রচনা করেছেন। 'জয় বাংলা- বাংলার জয়', 'একতারা তুই দেশের কথা', 'একবার যেতে দে না', 'গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে', 'আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল', 'শুধু গান গেয়ে পরিচয়'-সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের রচয়িতা তিনি।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের জন্ম ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার তালেশ্বর গ্রামে। ১৯৬৪ সাল থেকে তিনি তৎকালীন রেডিও পাকিস্তানে গান লিখতে শুরু করেন।
সুভাষ দত্তের 'আয়না ও অবশিষ্ট' চলচ্চিত্রের 'আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল' গানের মধ্য দিয়ে তিনি চলচ্চিত্রের জন্য গান লেখা শুরু করেন।
দেশ চিত্রকথা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান থেকে গাজী মাজহারুল ইসলাম 'শাস্তি', 'স্বাধীন', 'শর্ত', শ্রদ্ধা', 'ক্ষুধা', 'স্নেহ', 'পরাধীন', 'আর্তনাদ', 'পাষাণের প্রেম', 'তপস্যা', 'উল্কা', 'আম্মা', 'এই যে দুনিয়া' নামের চলচ্চিত্র প্রযোজনা ও পরিচালনা করেছেন।
গাজী মাজহারুল ইসলামের 'জয় বাংলা বাংলার জয়', 'একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল' ও 'একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়'- গান তিনটি বিবিসির সর্বকালের সেরা ২০ বাংলা গানের মধ্যে জায়গা করে নেয়।
রাজনীতির সঙ্গে তিনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন। তিনি জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন।
গীতিকার হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান গাজী মাজহারুল ইসলাম। এর বাইরে ২০০২ সালের একুশে পদক, ১৯৭২ সালের প্রেসিডেন্ট স্বর্ণপদক, এস এম সুলতান স্মৃতি পদকসহ একাধিকবার বাচসাস পদক এবং অসংখ্য সম্মাননা রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।