চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল প্রকল্প পরিদর্শন করবে বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল
চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য চার হাজার কোটি টাকা ঋণ প্রদানকারী বিশ্বব্যাংকের একটি কারিগরি প্রতিনিধি দল ৪ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর প্রকল্পস্থল পরিদর্শন করবে।
বে-টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য চ্যানেল ড্রেজিং এবং ব্রেকওয়াটার নির্মাণকাজের পরামর্শদাতা হিসেবে সরকার ইতোমধ্যেই চারটি জার্মান সংস্থা - সেলহর্ন, ডাব্লুএসপি, কেএস এবং অ্যাকোয়া-কে নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ৩১ আগস্ট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে চারটি পরামর্শক নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ এবং চ্যানেল ড্রেজিংয়ের জন্য পরামর্শক নিয়োগ বে-টার্মিনাল প্রকল্পের একটি বড় অগ্রগতি। আমরা শীঘ্রই তাদের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করব। প্রায় চার হাজার কোটি টাকা লাগবে এ কাজে, যা বিশ্বব্যাংক দেবে।"
বে-টার্মিনাল প্রকল্পের আওতায় তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে- একটি চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে এবং অন্য দুটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় বিদেশি বিনিয়োগে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (সিপিএ) অর্থায়নে টার্মিনাল নির্মাণের তত্ত্বাবধানকারী কুনহোয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কনসাল্টিং কোম্পানি লিমিটেড এবং ডায়ান ইয়াং কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড ইতোমধ্যেই ইনসেপশন প্রতিবেদন জমা দিয়েছে।
ওই টার্মিনাল প্রসঙ্গে রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান বলেন, "আমরা ২০-২১ সেপ্টেম্বর স্টেকহোল্ডারদের একটি সভা করব। এর পরে প্রকল্পের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এটি বে টার্মিনাল প্রকল্পেরও একটি বড় অগ্রগতি।"
বিদেশি বিনিয়োগে নির্মিত দুটি টার্মিনালের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠান আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়াংকে লেনদেন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। টার্মিনাল পরিচালনার জন্য একটি ব্যবসায়িক মডেল প্রস্তুত করতে তারা ডিপি ওয়ার্ল্ড এবং পিএসএ সিঙ্গাপুরের সাথে কাজ করছে।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠানটি একটি ব্যবসায়িক মডেল তৈরি করবে যা বে টার্মিনালের নির্মাণ প্রক্রিয়া, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশের ভাগ এবং ইজারার সময়কালের একটি রূপরেখা দেবে।
বর্তমানে, ৯.৫ মিটার গভীরতা এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবেশ করতে পারে না। নতুন বে টার্মিনালে ১২ মিটার গভীর এবং ২৬০ মিটার লম্বা জাহাজ প্রবেশ করতে পারবে। জাহাজগুলোকে আর জোয়ারের ওপর নির্ভর করে চলতে হবে না।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পর, ৬ হাজার কন্টেইনার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন জাহাজও বন্দরে ভিড়তে পারবে। বর্তমানে ১৮০০ কন্টেইনারবাহী জাহাজই বন্দরে ভিড়তে পারে।
বে-টার্মিনালটি প্রায় ২৫০০ একর জমির উপর নির্মিত হবে, যার মধ্যে ৮৭১ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন এবং সরকারি জমি; বাকি ১৬০০ একর জায়গা সমুদ্র থেকে উদ্ভূত।