সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে চবি প্রশাসনের মামলা
সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) এক ছাত্রের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধ আইনে মামলা করা হয়েছে। চবি নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান শেখ মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক বাদি হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন।
অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর নাম জোবায়ের হোসেন। তিনি চবি আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রুহুল আমিন সবুজ বলেন, বুধবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রধান বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। তদন্ত করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জানা যায়, বুধবার সকালে স্থানীয় সিএনজি চালক কর্তৃক সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদ, ক্যাম্পাসে চক্রাকার বাস সার্ভিস চালু ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিতের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে আন্দোলনে নামে একদল শিক্ষার্থী। পরে আন্দোলনকারীদের প্রক্টর অফিসে ডাকা হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া শোনেন প্রক্টরিয়াল বডি। এ সময় আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থীকে সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রক্টর অফিসে আটক রাখা হয়।
দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এ সময় তার মোবাইলে রাষ্ট্রবিরোধী ও সরকার বিরোধী বিভিন্ন পোস্ট ও ছবি এবং শাটল ট্রেনে নাশকতার পরিকল্পনা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়া বলেন, 'এক শিক্ষার্থীকে সন্দেহ হওয়ায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তার কাছ থেকে একটি ডায়েরি পেয়েছি যেখানে সরকারবিরোধী বিভিন্ন আন্দোলনের পরিকল্পনা ছিলো। তার মোবাইলের গ্যালারিতেও সরকার বিরোধী বিভিন্ন ছবি পাওয়া গেছে।'
তিনি আরো বলেন, 'পরে হাটহাজারী থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। তারা এসে সবকিছু চেক করে তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার প্রমাণ পায় এবং তা মামলাযোগ্য অপরাধ বলে আমাদেরকে মামলা করার পরামর্শ দেন। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দপ্তরের প্রধান বাদী হয়ে হাটহাজারী থানায় মামলা দায়ের করেন।'
মামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
বিবৃতিতে বলা হয়, একজন শিক্ষার্থীর মত প্রকাশ করার মৌলিক অধিকার রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন সম্পূর্ণ এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে আন্দোলন করার দায়ে শিক্ষার্থীদের তুলে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘসময় আটকে রেখে তাদের হেনস্তা করেছে। এটি সম্পূর্ণ অন্যায় এবং অসাংবিধানিক, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর করতে পারেনা।