এবার চবিতে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত শেখ

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিতা বিভাগে পড়ার আগ্রহ নিয়ে ৫৫ বছর বয়সী বেলায়েত শেখ এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন। সোমবার ( ২২ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের ডি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেবেন তিনি।
পরীক্ষায় অংশ নিতে রোববার (২১ আগস্ট) সকাল ৯ টায় গাজীপুর থেকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পৌঁছেছেন বেলায়েত শেখ। উঠেছেন তার পরিচিতি এক শিক্ষার্থীর বাসায়। তার পরীক্ষার কেন্দ্র পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে।
এর আগে ঢাকা, রাজশাহী ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেও কৃতকার্য হননি বেলায়েত। তবে এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ করার ব্যপারে আশাবাদী তিনি।
রোববার দুপুরে দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বেলায়েত শেখ বলেন, আমি দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় শ্রীপুর প্রতিনিধি কাজ করছি। সেখান থেকেই সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনার ইচ্ছে জাগে। আগে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাশ করতে না পারলেও এবার আমি আশাবাদী।
"বর্তমানে আমি অসুস্থ। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার হই। অসুস্থতা নিয়েই চট্টগ্রামে এসেছি। আমি আমার লক্ষপূরণে অবিচল। এই পরীক্ষায় পাশ না করলেও আমি থেমে যাবো না। প্রয়োজনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবো।
বেলায়েত শেখের জন্ম ১৯৬৮ সালে। তার বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায়। দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা তিনি। বড় ছেলে বিয়ে করে ব্যবসা করছেন। ছোট ছেলে শ্রীপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়ছেন। একমাত্র মেয়েকে গাজীপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ার সময় বিয়ে দেন বেলায়েত।
বেলায়েত শেখ টিবিএসকে বলেন, আমি ১৯৮৩ সালে তিনি এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলাম। সে সময় বাবা গুরুতর অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় আমাকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে। অভাবের কারণে আমি এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারিনি। ৫০ বছর বয়সে ২০১৭ সালে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে নিজেই লেখাপড়া শুরু করি।'
২০১৯ সালে ঢাকার বাসাবোর দারুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসা থেকে দাখিল (এসএসসি) পাস করেন তিনি। এরপর ২০২১ সালে রাজধানীর রামপুরার মহানগর কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। একই বছর তার ছেলে এসএসসি পাস করে। এসএসসিতে জিপিএ ৪.৪৩ এবং এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৫৮ পান তিনি।
বেলায়েত শেখ বলেন, "বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার খরচ বহন করার পুরোপুরি সক্ষমতা আমার নেই। কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি স্বল্প টিউশন ফিতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ দেয় তাহলে আমি আমার স্বপ্নপূরণে সফল হবে।"