কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই গার্ডার ঝোলানো ছিল: বেঁচে ফেরা ভুক্তভোগী

গত উত্তরার মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় পরিবারের পাঁচজন সদস্য হারিয়েছেন নব বিবাহিত দম্পতি রিয়া মনি ও হৃদয়। গত শনিবারই বিয়ে হয় তাদের।
কান্নায় ভেঙে পড়ে রিয়া মনি বলছিলেন, "আমি সবকিছু হারিয়েছি। ওরা সামান্য লাভের জন্য কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই গার্ডারটি ঝুলিয়ে রেখেছিল। গাড়ির ভেতর চাপে পিষ্ট অবস্থায় আমার হাতে মাথা রেখে মা মারা যান"।
"তার মুখ-নাক থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। তিনি আমার সাথে শেষবারের মতো কথাও বলতে পারলেন না"।
১৫০ টন ওজনের গার্ডারটি ভেঙে গাড়ির ওপর পড়ার সাথেসাথে রিয়া মনি ও তার স্বামী রেজাউল করিম হৃদয় গাড়ি থেকে বের হতে সক্ষম হন। কিন্তু পরিবারের বাকি সদস্যদের বাঁচাতে পারেননি।
মৃত স্বজনদের দেখতে আজ সোহরাওয়ার্দি মেডিক্যাল কলেজের মর্গে গিয়েছিলেন নব বিবাহিত এ দম্পতি। "তারা মানুষের জীবন নিয়ে খেলে কেন? আমরা সবকিছু হারিয়েছি। জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাই আমরা", বলছিলেন রিয়া মনি।
রিয়ার মা ফাহিমা আকতার, শ্বশুর রুবেল হাসান, ফাহিমার বোন ঝর্ণা ও তার দুই শিশু সন্তান ঘটনাস্থলেই মারা যায়।
দক্ষিণখানের কাওলায় বৌভাতের অনুষ্ঠানের পর নববধূর আশুলিয়ার বাড়িতে যাচ্ছিলেন তারা, গাড়ি চালাচ্ছিলেন হৃদয়ের বাবা।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে রেজাউল করিম হৃদয় বলছিলেন, "কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই রাস্তার ওপর গার্ডারটি ঝোলানো ছিল। ওই গার্ডারের নিচ দিয়েই যানবাহন পারাপার করছিল, আমরাও একই পথেই এগোই। হঠাৎ করেই আমাদের গাড়ির ওপর গার্ডার পড়ে সব শেষ হয়ে যায়"।
"এই অবহেলার জন্য দায়ী কারা?", প্রশ্ন রাখেন হৃদয়।
এ ঘটনায় চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে এ মামলা করেন নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্না আক্তারের ভাই আফরান মন্ডল বাবু ।