ট্রানজিট ট্রায়ালে আগামী ৫ আগস্ট মোংলায় পৌঁছাবে ভারতীয় জাহাজ

বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করে ভারতের ট্রানজিট সুবিধা নেওয়ার দ্বিতীয় দফা ট্রায়াল শুরু করতে কোলকাতা বন্দর থেকে ছেড়ে আসা জাহাজ আশরাফি-২ আগামী ৫ আগস্ট মোংলা বন্দরে পৌঁছাবে।
লোহার ১৬ টন পাইপ নিয়ে আসা জাহাজটির একটি কন্টেইনার মোংলা বন্দর থেকে তামাবিল-ডাউকি সীমান্ত হয়ে ভারতে পৌঁছাবে। মোংলা বন্দর থেকে তামাবিল হয়ে মেঘালয়ের শিলংয়ের পথে ভারতীয় পণ্যবাহী কন্টেইনার বাংলাদেশি ট্রাক বা ট্রেলারে পরিবহন হবে।
অন্যদিকে, ভারতের মালবাহী আরেকটি কন্টেইনার ডাউকি-তামাবিল সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে কোলকাতা সমুদ্রবন্দরে পৌঁছাবে।
বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতকে ট্রানজিট সুবিধা দিতে চার বছর আগে যে চুক্তি হয়েছে, তা পুরোপুরি কার্যকর করার অংশ হিসেবে প্রস্তাবিত চারটি ট্রায়াল রানের মধ্যে দু'টি ট্রায়াল রান সম্পন্ন হবে।
বাকি দু'টি ট্রায়াল রান হবে ভারতের শেওলা থেকে বাংলাদেশের মোংলা বন্দর হয়ে কোলকাতা বন্দর এবং ভারতের বিবিরবাজার থেকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে কোলকাতা বন্দরে কন্টেইনার পরিবহন।
ভারতের কন্টেইনারবাহী জাহাজের মোংলা বন্দরে আগমন এবং ট্রানজিটের ট্রায়াল রান সম্পর্কে জানতে রোববার নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মোস্তফা কামালের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জানতে চাইলে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ সাজেদুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
তবে মোংলা বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো. মোস্তফা কামাল টিবিএসকে বলেন, কোলকাতা বন্দর থেকে আশরাফি-২ জাহাজটি ৫ আগস্ট মোংলা বন্দরে এসে পৌঁছাবে। অগ্রাধিকারভিত্তিতে ওই জাহাজের কন্টেইনার খালাসের ব্যবস্থা নিতে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২০১৫ সালে দুই দেশ একটি সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) স্বাক্ষর করে যা চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে পণ্য পরিবহনের অনুমতি দেয়।
২০১৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় এ মর্মে একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর (এসওপি) স্বাক্ষরিত হয়। পরের বছর প্রথম ট্রায়াল রানে ভারত চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আখাউড়া হয়ে সড়কপথে আগরতলায় পণ্য পরিবহন করে।
এর আগে, বাংলাদেশ অস্থায়ীভাবে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ত্রিপুরা পর্যন্ত টনপ্রতি পণ্যের এসকর্ট ফি ৫০ টাকা, চালানপ্রতি ডকুমেন্ট প্রসেসিং ফি ৩০ টাকা এবং কনটেইনার প্রতি স্ক্যানিং ফি ২৫৪ টাকা নির্ধারণ করেছিল।
গত মার্চে অনুষ্ঠিত দুই দেশের জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ অন কাস্টমসের সভায় ভারত জানায়, ট্রায়াল রানের জন্য নির্ধারিত এসকর্ট চার্জ সহ প্রাসঙ্গিক ফি অপরিবর্তিত রেখেই তারা দ্রুত স্থায়ীভাবে চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর ব্যবহার শুরু করতে চায়।
কিন্তু ট্রায়াল রানের অভিজ্ঞতার আলোকে প্রয়োজনে আরও ট্রায়াল রান পরিচালনা এবং এসকর্ট চার্জ বাড়ানোর পরে আসলে বাংলাদেশ বন্দর দুটিকে ভারতের স্থায়ী ব্যবহারের জন্য খুলে দিতে চেয়েছিল।
এ পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে চারটি ট্রায়াল রান চালানোর বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
গত ১৮ জুলাই ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক নোট ভারবালে জানায়, ট্রায়াল রান সম্পন্ন করতে ২৫ জুলাই কোলকাতা বন্দর থেকে ভারতের ট্রানজিট কন্টেইনারবাহী জাহাজ আশরাফি-২ ছাড়বে, যা পরবর্তী ৩-৪ দিনের মধ্যে মোংলা বন্দরে পৌঁছাবে।