নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আইনি সংস্কারের প্রস্তাব টিআইবি’র
অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের স্বার্থে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) প্রয়োজনে সরকারের কাছে আইনি সংস্কারের প্রস্তাব দেওয়ার পরমর্শ দিয়েছে দুর্নীতি বিরোধী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের চরিত্র কীরকম হবে, তার আচরণ কীরকম হবে, গঠন কীরকম হবে- এ ধরনের বিষয়গুলো সম্পর্কে নির্বাচন কমিশন তাদের চিন্তাভাবনা প্রসূত পরামর্শ সরকার বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দিতে পারেন। প্রয়োজনে আইনি সংস্কারের প্রস্তাব করতে পারেন।
'পাশাপাশি আমরা প্রস্তাব করেছি, প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড সমান রাখা নিশ্চিত করতে হবে', যোগ করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, 'আমরা প্রস্তাব করছি নির্বাচনের সময় তথ্য প্রবাহে যেন কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়। গণমাধ্যম ও নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা যেন অবাধে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ ও গণমাধ্যমকে তথ্য সংগ্রহ ও প্রকাশের সুযোগ পায় এবং ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণ করার চর্চা থেকে যেনো বিরত থাকা হয়। একইসঙ্গে কেন্দ্রভিত্তিক যেন তথ্য অনতিবিলম্বে ওয়েবসাইটে প্রকাশ যেন করা হয়', তিনি বলেন।
ইভিএমের বিষয়ে তিনি বলেন, এর কারিগরি দিকটা যেনো ক্রুটিহীন হয় ও সকল অংশীজনের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
টিআইবি-র সঙ্গে বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, 'আইন কানুন যেটা আছে, তাতে সরকার আমাদের সহযোগিতা করতে বাধ্য। সংসদ নির্বাচনে প্রচণ্ড সহিংসতা হলে আমরা পুরো আসনের নির্বাচন বাতিল করে দেব, আমাদের সেই ক্ষমতা আছে।'
সিইসি বলেন, 'বারবার বলছি, নির্বাচনটা অংশগ্রহণমূলক হওয়া খুবই প্রয়োজন…দলগুলো প্রতিদিন যে আক্রমণাত্মক মন্তব্য করছে, সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে এসে যদি টেবিলে মুখোমুখি করা যায়, তাহলে আলোচনা হবে গঠনমূলক।'
কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, 'নির্বাচনে নমিনেশন পেতে অনেক খরচ হয়। এর ফলে আমাকে জিততেই হবে এমন একটা মনস্তাত্ত্বিক চিন্তা আসে। প্রার্থীরা ভাবেন, যে পয়সা খরচ করেছি, তা তুলে আনতেই হবে। এর ফলে কিন্তু একটা সহিংস চরিত্র গড়ে ওঠে। এই জায়গা কীভাবে নিয়ন্ত্রণ হবে জানি না। তবে দলগুলোর নেতৃত্বকে উপলব্ধি করা উচিত, নির্বাচনটা যেন বাণিজ্য না হয়। নমিনেশনটা এনে যে করেই হোক নির্বাচনে জিততে হবে, এই মানসিকতা যদি সরিয়ে আনা যায়, তাহলে আমাদের গণতন্ত্র, নির্বাচনী ব্যবস্থা ও বর্তমান অবস্থা উন্নত অবস্থায় পৌঁছাতে পারবে।'
সিইসি বলেন, 'নির্বাচনের সময় যে সরকার থাকবে সেটাই নির্বাচনকালীন সরকার। অপজিশন থেকে যে দাবিগুলো করা হচ্ছে এগুলো নিয়ে আমাদের কোনো মন্তব্য নেই। তত্ত্বাবধায়ক সরকার কিন্তু আমাদের বিষয় নয়। এটা সাংবিধানিক বিষয়।'