‘নৌকার বিপক্ষে একটা ভোট গেলে ৫টা লাশ পড়বে’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরোজ মিয়ার বিরুদ্ধে যদি একটা ভোটও দেওয়া হয়, তাহলে পাঁচটা লাশ পড়বে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ওই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল আলম। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) রাতে স্থানীয় লাপাং স্কুল মাঠে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থনে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য দানকালে প্রকাশ্যে এই হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
নির্বাচনে আনারস প্রতীকে লড়া স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নূর আলম ও তার সমর্থকদের ইঙ্গিত করে হুঁশিয়ারি দেন আশরাফুল। তার বক্তব্যের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামাল।
আগামী ২৮ নভেম্বর নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থী নূর আলমও আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু দলের মনোনয়ন না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র পদে লড়ছেন।
আশরাফুল তার বক্তব্যে বলেন, 'প্রশাসন কাজ করুক বা না করুক- নৌকার বিরুদ্ধে যদি একটা ভোটও কাটে, ওই ওয়ার্ডে পাঁচটা লাশ পড়বে ইনশাল্লাহ। লিডার ছাত্রলীগ তো, আবেগে চইলা আসছে। ইনশাল্লাহ নৌকার বিপক্ষে কেউ ভোট কাটতে পারবে না। আমরা শক্ত হাতে প্রতিবাদ করব'।
লাশ ফেলার বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আশরাফুল আলম বলেন, 'আমাদের সভা চলাকালে পাশের চিত্রী গ্রামে নৌকার বিপক্ষে ভোট কাটা হবে বলে খবর আসে। আসলে বয়স অল্প তো, বিবেকের তাড়নায় তখন বলে ফেলেছি- নৌকার বিপক্ষে যদি কেউ ভোট কাটতে আসে দরকার হলে পাঁচটা লাশ ফেলব। আবেগে বলে ফেলেছি। দয়া করে এটি নিয়ে নিউজ কইরেন না'।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মোর্শেদ হোসেন কামালের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নূর আলম বলেন, 'আমি এবং আবার সমর্থকদের প্রতিনিয়ত হুমকি-ধামকি দিচ্ছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর লোকজন। তারা এলাকায় অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করে। আমরা সবাই আতঙ্কে আছি। আমরা চাই নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, জনগণ ভোট দিবে। ভোটাররা যাকে খুশি, তাকে নির্বাচিত করবে'।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, 'এ ধরনের কোনো খবর শুনিনি। যদি এমন বক্তব্য কেউ দিয়ে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ভয়ভীতি দেখিয়ে এবং শক্তি প্রয়োগ করে ভোট নিয়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই'।