১৮৪ কোটি টাকা পাচার মামলায় ফালুসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র
দুবাইয়ে অফশোর কোম্পানি খুলে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা দুবাইয়ে পাচারের অভিযোগে করা মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার আদালতের সংশ্লিষ্ট শাখায় অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের উপপরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
দুদকের পরিচালক ও মামলাটির তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সৈয়দ ইকবাল হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০১৯ সালের ১৩ মে দুদকের করা এই মামলায় চারজনকে আসামি করা হলেও অভিযোগপত্রে তিনজনকে আসামি করা হয়। ফালু ছাড়া অন্য দুজন আসামি হলেন আরএকে পেইন্টস লিমিটেডের পরিচালক বিএনপি নেতা এস এ কে ইকরামুজ্জামান এবং স্টার সিরামিকস প্রাইভেট লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান। স্টার সিরামিকসের পরিচালক এবং আরএকে কনজিউমার প্রোডাক্টস লিমিটেডের সাবেক পরিচালক মো. আমির হোসাইন এজাহারে অসামি থাকলেও ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় তাঁকে অভিযোপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, অভিযুক্তরা ২০১০ সালে দুবাইয়ে আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, থ্রি স্টার লিমিটেড, ডেভেলমেন্ট ইইউই নামে অফশোর কোম্পানি খোলেন এবং বাংলাদেশে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা দুবাইয়ে পাচার করেন।
তারা দুবাইয়ে ওই অর্থ উর্পাজনের কোনো উৎসও দেখাতে পারেননি। ওই অর্থ কীভাবে উর্পাজন করা হয়েছে তার কোনো তথ্য প্রমাণ তাদের কাছে নেই। দুবাইয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা তারা বাংলাদেশ ব্যাংককে কখনও জানাননি বা কোনো ধরনের অনুমতি নেননি।
প্রকৃতপক্ষে, মোসাদ্দেক আলী ফালু বাংলাদেশে ক্ষমতার থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ প্রক্রিয়ায় দেশে অর্জিত অবৈধ অর্থ বিদেশে পাচার করে অফসোর কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন।
মামলার তদন্ত পর্যায়ে দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের অক্টোবরে ফালুর প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ করার আদেশ দেন আদালত।
দুদক জানিয়েছে, দুবাইয়ে ফালুর সম্পদের তথ্য জানতে এরই মধ্যে মিউচ্যুয়াল লিগাল অ্যাসিস্টেন্স রিকুয়েস্ট (এমএলএআর) পাঠানো হয়েছে। ওই তথ্য এলে তাও আলামত হিসেবে আদালতে উপস্থপান করা হবে।
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তখনকার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব ছিলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। সে সময় ঢাকার একটি উপনির্বাচনে সংসদ সদস্যও নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি।
পরে খালেদা জিয়া তাকে বিএনপির উপদেষ্টা পরিষদে নিয়ে আসেন। ২০১৬ সালে বিএনপির নতুন কমিটিতে ফালুকে উপদেষ্টা পরিষদ থেকে সরিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান করা হলে তিনি পদত্যাগ করেন।
এরপর থেকে রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় ফালু নিজের ব্যবসা নিয়েই আছেন। সিকিউরিটিজ, আবাসন, অ্যাগ্রো, আমদানি রপ্তানি ব্যবসায় জড়িত এই ব্যবসায়ী এনটিভির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক । তার বিরুদ্ধে এর আগেও বেশ কয়েকটি মামলা করেছে দুদক।