হাসপাতালে ভর্তি থাকবেন খালেদা জিয়া
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মঙ্গলবার রাতে বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন তার চিকিৎসক দলের প্রধান এফএম সিদ্দিকী।
তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার নতুন সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট থেকে মনে হচ্ছে তিনি কোভিড-১৯ সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
এফএম সিদ্দিকী জানান, মহামারীজনিত কারণে তারা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে খালেদার নিয়মিত অনেক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারেন নি।
"যেহেতু ম্যাডাম (খালেদা) বিএসএমএমইউ (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে সরাসরি তার বাসভবনে ফিরে আসেন এবং করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়, ফলে আমরা তার প্রয়োজনীয় অনেক পরীক্ষা করতে পারিনি। কিন্তু যেহেতু তিনি এখন কোভিডের সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে উঠছেন, ফলে আমরা তার সিটি স্ক্যান এবং একটি সার্বিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এখানে এনে রেখেছি"।
এই চিকিৎসক আরও জানান, "তিনি আজ (গতকাল) সিটি স্ক্যান সহ কিছু পরীক্ষা করিয়েছেন তবে রাতের বেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুবিধা না পাওয়ায় কিছু পরীক্ষা বাকি রয়েছে। বৃহস্পতিবার আরও কিছু পরীক্ষা করানো হবে। বারবার হাসপাতালে যাওয়া-আসা অসুবিধাজনক হওয়ার কারণে আমরা তাকে আপাতত হাসপাতালেই ভর্তি করিয়ে রেখেছি"।
খালেদা জিয়াকে কতদিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে জানতে চাইলে এফএম সিদ্দিকী বলেন, "সর্বোচ্চ এক-দুইদিন। রিপোর্টগুলো পাওয়ার পর আমরা পর্যালোচনা করব। তারপর তাকে বাসায় নিয়ে আসব।"
বিএনপি চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা 'স্থিতিশীল' জানিয়ে তিনি বলেন, "কোভিডের কোনো উপসর্গ নেই ওনার। উনি ভালো আছেন"।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গতকাল রাত ১০টার দিকে হাসপাতালে নেওয়া হয় খালেদা জিয়াকে।
তার আগে, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন ও খালেদার মেডিকেল টিমের সদস্যরা মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে খালেদা জিয়ার বাসায় তার সাথে দেখা করেন।
উল্লেখ্য, গত ১০ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা করা হয়, পরীক্ষায় তিনি পজিটিভ শনাক্ত হন।
৭৪ বছর বয়সী খালেদা জিয়ার বাতের ব্যথা, ডায়াবেটিস, চক্ষুরোগ ও অন্যান্য বার্ধক্যজনিত সমস্যা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে ছিলেন খালেদা জিয়া। পরে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেলে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
পারিবারিক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে তাকে গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে অস্থায়ীভাবে মুক্তি দেওয়া হয়।
স্থগিতাদেশ গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর শেষ হলেও পরে আবার এ বছরের ২৪ মার্চ পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়।
১৬ মার্চ সরকার আরও ছয় মাসের জন্য তার কারাগারের সাজা স্থগিত করে।
ছাড়া পাওয়ার পর থেকে গুলশানে নিজের বাসায়ই ছিলেন বিএনপি নেত্রী।