হবিগঞ্জে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মানুষকে সচেতন করতে কাজ করছে আক্রান্ত প্রতিটি দেশ। এর প্রতিষেধক আবিষ্কারের জন্য বিজ্ঞানীরা দিন রাত কাজ করছেন। আর এসময়ে বাংলাদেশে একের পর এক গুজব রটছে করোনার প্রতিষেধক হিসেবে। কোথাও রাত জেগে থানকুনি পাতা খাওয়া হচ্ছে, কোথাও বা আবার তুলসি পাতা।
তবে হবিগঞ্জে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে এমন একটি গুজবকে গ্রহণ করেছে স্থানীয় অধিবাসীরা যা রীতিমত অবাক করে দেবে আপনাকে।
গত ৩ দিনে হবিগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় পড়েছে মাথা ন্যাড়া করার হিড়িক। শত শত যুবক এরই মধ্যে মাথা ন্যাড়া করেছেন। সেই ন্যাড়া মাথার ছবি আবার দিচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
জেলার অন্যান্য এলাকার এত বেশি লক্ষ্য করা না গেলেও শায়েস্তাগঞ্জ এলাকায় রীতিমত উৎসবের আমেজে মাথা ন্যাড়া করা হচ্ছে। প্রশাসনের নিষে্ধ করেছে সেলুন খুলতে, তবু এর মধ্যেও কিভাবে এত এত যুবক মাথা ন্যাড়া করছেন তা অবাক করছে সচেতন মহলকে।
করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে মাথা ন্যাড়া করার এই বিষয়টি হাস্যকর বলছেন চিকিৎসকরা। তবে এই হাস্যরসের কাজ করে সগর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি শেয়ার দিতে দেখা গেছে অনেককেই। কেউ ছবি শেয়ার দিচ্ছেন, সেই ছবিতে ফেইসবুক বন্ধুরা উৎসাহ দিয়ে, সচেতনতা দাবি করে কমেন্টও করছেন।
এমনই একজন শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার নুরপুর গ্রামের চাকরিজীবী আকিল হোসেন টিপন। মাথা ন্যাড়া করে দলগত ছবি পোস্ট করেছেন ফেসবুকে।
তিনি বলেন, চুলের মাধ্যমে ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই করোনাভাইরাস যেন সংক্রমণ না করতে পারে, সেজন্য বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে মাথা ন্যাড়া করেছি।
দুর্গাপুর গ্রামের মাসুক মিয়াও একইভাবে মাথা ন্যাড়া করেছেন। তিনি জানান, সামান্য একটা কাজ করলে যদি বাঁচা যায়, তাহলে তা করতে সমস্যা কী? তাছাড়া এখন গরম কাল, ন্যাড়া হলে মাথাও ঠাণ্ডা থাকবে।
একই অভিমত শায়েস্তাগঞ্জ এলাকার শিহাব, সোহাগ, রাসেল, সালাউদ্দিনসহ মতো শত শত যুবকের।
এদের সবার একইরকম বক্তব্য, চুলের মাধ্যমে যেন করোনাভাইরাস সংক্রমণ না করতে পারে তাই তারা মাথা ন্যাড়া করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসক ইকবাল হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানান, করোনাভাইরাস যদি চুলে করে আসতে পারে, তাহলে ন্যাড়া মাথার ত্বকে করেও আসতে পারে। এমনকি মাথার ওপর পলিথিন দিলে সেটাতে করেও আসতে পারে। এইসব যুবক মাথা ন্যাড়া করে অপরাধ করেননি; তবে তারা যে গুজবে কান দিয়ে করোনাভাইরাস থেকে বাঁচতে এই কাজ করেছেন, তাতে প্রমাণ হয়, যুবক সমাজই এখনো ভাইরাসটি সম্পর্কে ভালো করে জানেন না। ফলে তাদের কাছ থেকে সচেতনতাও আসা করা যায় না। তবু সবাইকে সচেতন থাকতে হবে। গুজব এড়িয়ে যেতে হবে।