সোমবার থেকে দেশব্যাপী এক সপ্তাহের লকডাউন
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সোমবার থেকে দেশব্যাপী এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করেছে সরকার।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের শনিবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে জানিয়েছেন, "কারখানা ও শিল্প অঞ্চলগুলো বিভিন্ন স্বাস্থ্য নির্দেশনা মেনে চালু থাকবে। এ সময় কর্মীরা সীমিত আকারে ভিন্ন ভিন্ন শিফটে কারখানায় কাজ করবে"।
তবে জরুরি পরিষেবাসমূহ লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।
দেশে প্রতিদিন করোনাভাইরাসে শনাক্তের নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। মৃত্যুও বাড়ছে। গত বছরের জুন-জুলাই মাসে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফার্স্ট ওয়েভ ছিল। সে সময়ও সংক্রমণ এত দ্রুত বাড়েনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে এবার সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয় বাড়বে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ৮৩০ জনের শরীরে। এটিই একদিনে সর্বাধিক শনাক্তের ঘটনা। এ নিয়ে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ২৪ হাজার ৫৯৪।
অন্যদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৯ হাজার ১৫৫।
গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের হার ছিল ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ ও মৃত্যুহার ছিল ১ দশমিক ৪৭ শতাংশ। অথচ এর আগের দিন বৃহস্পতিবারও সংক্রমণের হার ছিল ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ।
দেশে প্রতিদিন করোনাভাইরাসে শনাক্তের নতুন রেকর্ড তৈরি হচ্ছে। মৃত্যুও বাড়ছে। গত বছরের জুন-জুলাই মাসে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ফার্স্ট ওয়েভ ছিল। সে সময়ও সংক্রমণ এত দ্রুত বাড়েনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবারের সংক্রমণ পরিস্থিতি ভয়াবহ। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ না নিলে এবার সংক্রমণ ও মৃত্যু উভয় বাড়বে।
এর আগে গত ২৯ মার্চ তারিখে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সরকারের পক্ষ থেকে ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করা হয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৫ মার্চ সরকার প্রাথমিকভাবে ১০ দিনের একটি লকডাউন ঘোষণা করেছিল যা পরে কয়েক দফায় বর্ধিত করা হয়। তবে ভাইরাস হতে সংক্রমণের মাত্রা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসায় এবং করোনাভাইরাসে মৃতের সংখ্যা হ্রাস পাওয়ায় জুনের পরে লকডাউন শিথিল করা হয়।
বিভিন্ন দেশ ইতিমধ্যে ভাইরাস মোকাবেলায় নানা পন্থা গ্রহণ করেছে, তবে কোভিড -১৯ এর ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউন বিশ্বজুড়ে সমাদৃত একটি উপায় হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে।
করোনাভাইরাস মহামারীতে এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৮৮ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ সংক্রমিত হয়েছে। বিধ্বংসী এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বজুড়ে মৃত্যুর মিছিলে নাম লিখিয়েছে ২.৮ মিলিয়ন মানুষ।
করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, এরপরেই আছে ব্রাজিল, ভারত, ফ্রান্স এবং রাশিয়া।
জন্স হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় (জেএইচইউ) থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ পর্যন্ত ৩ কোটি ৬ লাখ ৬ হাজার ৭৭৮ জন করোনায় আক্রান্ত এবং ৫ লাখ ৫৪ হাজার ৬৯ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।
ল্যাটিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক দিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগী এক কোটি ২৯ লাখ ১০ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ২৮ হাজার ২০৬ জনের।
পৃথিবীর দ্বিতীয় জনবহুল দেশ ভারত করোনায় আক্রান্ত দেশের তালিকায় তৃতীয় এবং মৃত্যু নিয়ে চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে। দেশটিতে মোট আক্রান্ত এক কোটি ২৩ লাখ ৩ হাজার ছাড়িয়েছে এবং মারা গেছেন ১ লাখ ৬৩ হাজার ৩৯৬ জন।
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এখনও লকডাউন বহাল রয়েছে। ফ্রান্সে তৃতীয়বারের মত লকডাউন ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। ইতালিতেও ইস্টারের ছুটির আগে তিনদিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। ইস্টারের জন্য জার্মানীতেও সাময়িকভাবে এপ্রিলের প্রথম পাঁচ দিন প্রথমে লকডাউনের ঘোষনা দেয়া হয়েছিল, যদিও পরে সে সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসা হয়।
আয়ারল্যান্ডে আগামী ৫ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন বিধি বহাল থাকবে, ইউক্রেনে চলবে এপ্রিলের ৯ তারিখ পর্যন্ত।