সিলেটে আবারও ভূমিকম্প
ভূমিকম্প নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে সিলেটে ফের ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। সোমবার সন্ধ্যার দিকে দুই দফা ভূমিকম্প অনুভূত হয়।
আজ (সোমবার) সন্ধ্যা ৬টা ২৭ ও ৬টা ২৯ মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে সিলেট। এ সময় নগরজুড়ে আতঙ্ক দেখা দেয়। বাসা ও অফিসে থাকা মানুষজন ঘর ছেড়ে আতঙ্কে বাইরে বেরিয়ে আসেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।
ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ও মাত্রা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী।
এর আগে, গত ২৯ মে সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টার মধ্যে সিলেটে অন্তত পাঁচটি ভূকম্পন অনুভূত হয়। পরদিন ভোরে আবার ভূমিকম্প হয়। যার সবগুলোর কেন্দ্রস্থল সিলেটের জৈন্তাপুর এলাকায়।
২৯ মে ভূমিকম্পের পর থেকেই সিলেটজুড়ে ভূমিকম্প আতঙ্ক বিরাজ করছে।
অনেক বিশেষজ্ঞের মতে, বড় ধরনের ভূমিকম্পের আগে বা পরে এমন ছোট ছোট ভূকম্পন অনুভূত হয়। ফলে ভূমিকম্পের ডেঞ্জারজোন হিসেবে পরিচিত সিলেটে বড় ধরনের ভূমিকম্পের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
২৯ মে ভূমিকম্পের পর সিলেট সিটি করেপারেশনের পক্ষ থেকে নগরের ঝূঁকিপূর্ণ ৭টি বহুতল বিপণী বিতান ১০ দিনের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এছাড়া নগরের বহুতল ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনীয় কি না, তা জরিপ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান বলেন, '২০১৬ সালে সর্বশেষ সিলেটের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোর ব্যাপারে জরিপ চালানো হয়েছিল। এতে ৩২টি ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। গত ২৯ মের ভূমিকম্পের পর এই ভবনগুলোর মধ্যে ৭টি বাণিজ্যিক ভবন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।'
তিনি বলেন, 'সিলেটে প্রায় ৭০ হাজার হোল্ডিং আছে। এরমধ্যে সাততলার উপরে ভবন আছে অন্তত ৪০০টি। তবে সিটি করপোরেশনের হিসেবের বাইরেও আরও অনেক বহুতল ভবন আছে। এখন আবার বহুতল ভবনগুলোর ব্যাপারে জরিপ চালানো উচিত।'
নূর আজিজ বলেন, 'নগরের বহুতল ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনীয় কি না, তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন। আমরা দ্রুতই সে উদ্যোগ নেব। সব ঝুঁকিপূর্ণ ভবন আমাদের পক্ষে ভেঙে ফেলা সম্ভব নয়। তবে যে ভবনগুলো ভূমিকম্প সহনীয় নয়, সেগুলোর সামনে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেব।'
বিশেষজ্ঞদের মতে, সিলেটে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন নগরীর সব ভবনকে ভূমিকম্প প্রতিরোধক করা। এজন্য নতুন ভবন নির্মাণের আগে মাটি পরীক্ষা করতে হবে। মাটির ধরনের উপর নির্ভর করে ভবনকে একতলা বা বহুতল করতে হবে। জলাশয় ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা যাবে না। ভূমিকম্প প্রতিরোধী ডিজাইনে এবং মানসম্পন্ন নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে দালান তৈরি করতে হবে। আর পুরনো দুর্বল ভবনগুলোকে সংস্কার করে শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে। সম্ভব না হলে ভেঙে ফেলতে হবে। বিল্ডিং কোড লঙ্ঘন করে কোনো অবস্থাতেই ভবন নির্মাণ করা যাবে না।