রোহিঙ্গা সংকট: বিশ্ব সম্প্রদায়ের দ্রুত উদ্যোগ চান প্রধানমন্ত্রী
রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানে কথামালার ঊর্ধ্বে এসে বিশ্ব সম্প্রদায়কে দ্রুত উদ্যোগী হওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে কথামালার ঊর্ধ্বে এসে আমাদের বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এই সংকটের সমাধান না আসা পর্যন্ত বাংলাদেশ সবার সাথে কাজ চালিয়ে যাবে।'
বুধবার জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে 'হাই-লেভেল সাইড ইভেন্ট অনফোরসিবলি ডিসপ্লেস মিয়ানমার ন্যাশনালস (রোহিঙ্গা) ক্রাইসিস: ইম্পারেটিভস ফর অ্যা সাস্টেইনেবল সলিউশন' শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের মোট ২৩ জন বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানের পর স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, সকল বক্তারা রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের বিষয়ে বাংলাদেশের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আমি বারবার বলে আসছি যে তারা মিয়ানমারের নাগরিক এবং তাদের অবশ্যই নিরাপদে এবং আত্মমর্যাদার সাথে মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে। আমাদের সবাইকে বিশেষ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এটি করার জন্য সম্ভাব্য সবকিছু করতে হবে।'
তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বাংলাদেশের বন্ধু এবং উন্নয়ন সহযোগীদের এই বিষয়ে বাংলাদেশের চেষ্টার সহযোগিতা করার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা নিজেরাও তাদের মাতৃভূমি ফিরে যেতে চায়। এই মানবিক সংকটের সমাধান একটি সম্মিলিত দায়িত্ব কারণ এটি আন্তঃসীমান্ত এবং আঞ্চলিক সমস্যা। এই গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সমাধানে দেরি করা মানেই আমাদের সবার নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
তিনি বলেন, 'প্রত্যাবাসন উদ্যোগে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় রোহিঙ্গাদের মাঝে ক্রমবর্ধমান হতাশা বাড়ছে। তাদের অনেকে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত হচ্ছে এবং উগ্রবাদী মতাদর্শে জড়ানোরও ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। এটি পুরো অঞ্চলকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে। তাই আমাদের এখনই প্রকৃত তৎপরতার সাথে কাজ করতে হবে।'
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে পাঁচটি প্রস্তাব পেশ করেন।
বক্তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার কথা জানান।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, সকল বক্তারা রোহিঙ্গা সংকটের একটি জরুরি সমাধানের জন্য একমত হয়েছেন।
আফগান সংকটের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যু বিচ্যুত হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'অনেকে হয়তো বলতে পারেন যে রোহিঙ্গা ইস্যু আফগান ইস্যুর কারণে সরে গেছে। রোহিঙ্গা ইস্যু এখনও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। '
পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।