মহামূল্যবান ভ্যাকসিনের এ কেমন যাত্রা?
চট্টগ্রামে ৫ লাখ ৪২ হাজার ২৭৪ জন মানুষ ভ্যাকসিনের রেজিস্ট্রেশন করলেও দুই ডোজ টিকা পেয়েছেন এমন মানুষের সংখ্যা ৩ লাখ ১৬ হাজার ৩০১ জন। টিকা পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন আরও প্রায় ২০ লাখ মানুষ। টিকা পেতে প্রবাসীরা প্রতিদিন জনশক্তি অফিসে দীর্ঘ লাইন দিচ্ছেন; বৃষ্টিতে ভিজে বিক্ষোভ করছেন। এমন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ছবি "মহামূল্যবান ভ্যাকসিন" নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের চরম উদাসীনতার উদাহারণ হয়ে উঠেছে।
সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সামনে থেকে তোলা একটি ছবিতে দেখা যায়, একটি সিএনজি অটোরিকশার পেছনে ও পাশে দড়ি দিয়ে 'বাদুড়ঝোলা' করে বাঁধা হয়েছে চীন থেকে আসা সিনোফার্ম টিকার কয়েকটি কোল্ডবক্স। কোনো কারণে সামান্য এদিকে ওদিক হলেই এইসব মহামূল্য ভ্যাকসিনের হতে পারে সর্বনাশ। এদিকে অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভ্যাকসিন পরিবহণ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেটিজেনরা সমালোচনায় মুখর হয়েছেন।
রোববার (১১ জুলাই) করোনা ভ্যাকসিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম আসার পর সোমবার উপজেলা পর্যায়ে টিকা বিতরণ শুরু করে সিভিল সার্জন কার্যালয়। সেদিন থেকেই বিভিন্ন উপজেলায় এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন টিকাদান কেন্দ্রে ভ্যাকসিনের চালান পাঠানো শুরু হয়।
জানা গেছে, সোমবার সিভিল সার্জন অফিসে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পক্ষ থেকে পাঠানো হয় একটি সিএনজি অটোরিকশা। সেই অটোরিকশার ভিতরে ২টি এবং পেছনে বেঁধে নেওয়া হয়েছে আরও একটি টিকা ভর্তি কোল্ডবক্স। এসময় পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স ও হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে পিকআপ ভ্যান এসেছিলো টিকার চালান গ্রহণ করতে।
এভাবে অরক্ষিত ও ঝুঁকিপূর্ণভাবে ভ্যাকসিন নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে আনোয়ারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু জাহেদ মো. সাইফুদ্দিন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
রোববার সকালে চট্টগ্রামে চতুর্থ দফায় মর্ডনা ও সিনোফার্ম মিলে মোট ১২০ কার্টন ভ্যাকসিন এসে পৌছায়। ভ্যাকসিনগুলো গ্রহণ করেন চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ও ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাক্তার সেখ ফজলে রাব্বি। নতুন করে পাওয়া সিনোফার্মের ৭৮ হাজার ৪০০ ডোজ ভ্যাকসিন কমিটির মাধ্যমে উপজেলা পর্যায়ে বন্টন করা হবে। সিনোফার্মের টিকাও সংরক্ষণ করতে হয় ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়। মর্ডানার ভ্যাকসিন দেওয়া হবে নগরের ৯ টি কেন্দ্রে। এ টিকা রেফ্রিজারেটরে ২ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৩০ দিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। আর মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করা যাবে ৬ মাস।