পরিবহন ধর্মঘট: চট্টগ্রামে বাড়তি ভাড়া, বাড়তি ভোগান্তি
জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে বাস-ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিক-শ্রমিক সংগঠনগুলোর ধর্মঘট তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। চট্টগ্রামে পরিবহন মালিক গ্রুপ নামে একটি সংগঠন গাড়ি চালানোর ঘোষণা দিলেও সংকট কাটেনি।
সড়কে পরিবহন সংকটে পড়ে পথে পথে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। যে ক'টি বাস, টেম্পো ও হিউম্যান হলার চলাচল করছে, তারা আদায় করছে দ্বিগুণ ভাড়া।
ধর্মঘটের তৃতীয় দিনে রোববার সকালে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায় যাত্রীরা চরম দুর্দশা পোহাচ্ছেন। বাসের অপেক্ষায় দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেছেন তারা, কিন্তু বাসের দেখা নেই। বেশ কিছুক্ষণ পরপর একটি বাস এলে সেটিতে উঠতে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে মানুষ। গাড়িতে উঠার আগেই বলে দেওয়া হচ্ছে, 'গাড়িতে ওঠা-নামা ১০ টাকা।'
কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ট্যাক্সি কিংবা মোটরসাইকেলে করে কাছের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা হতে দেখা গেছে অনেককে। এছাড়া ভরসা হিসেবে ছিল রিকশা। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে রিকশাচালক ও অটোরিকশাচালকরা বেশি ভাড়া হাঁকছেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব মো. বেলাল দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'আমাদের ৩০০ গাড়ির সবগুলোই এখন রাস্তায়। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যা করার, সব চেষ্টাই করা হচ্ছে।'
বাড়তি ভাড়া আদায় সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করেন, 'আগে গাড়ি রাস্তায় নামুক, তারপর ভাড়া ঠিক করব।'
গত ৩ নভেম্বর রাতে জ্বালানি তেলের দাম ১৫ টাকা বাড়িয়ে দেয় সরকার। এই সিদ্ধান্ত ঘোষণার পর ৫ নভেম্বর সকাল থেকে বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান ও লরি চালক-মালিকেরা গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে চট্টগ্রাম নগরের উত্তর, দক্ষিণসহ সব এলাকার মালিক ও শ্রমিক সংগঠনগুলো গাড়ি চালানো বন্ধ রাখে।
মামুন আল হাসান নামে এক যাত্রী টিবিএসকে বলেন জানান, শাহ আমানত সেতু থেকে বাঁশখালীর গুনাগরি পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশাগুলো জনপ্রতি ভাড়া দাবি করছে ২০০ টাকা। অন্য সময় যা জনপ্রতি ৬০ টাকা।
বাস না পেয়ে সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নগরের ওয়াসা এলাকায় জটলা বেঁধে অপেক্ষা করছিলেন বেশ কিছু মানুষ। তারা অভিযোগ করেন, হিউম্যান হলার ও বাস চালকরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন।
নগরীর মুরাদপুর, জিইসি মোড়, অক্সিজেন, কাপ্তাই রাস্তার মাথা ও টাইগারপাস এলাকায় বাস চলাচল তেমন একটা দেখা যায়নি। হঠাৎ দু-একটি বাস চললেও সেগুলোতে মানুষ যে যেভাবে পেরেছে ঠাসাঠাসি করে উঠেছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশ দক্ষিণ বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, গতকালের চাইতে আজ রাস্তায় গাড়ির সংখ্যা বেশি, তবে সংকট কাটেনি।