পদ্মা সেতু: শেষ হল সংযুক্তি, যান চলাচল আগামী বছর
পদ্মা সেতুতে সড়কপথের শেষ স্ল্যাবটি বসানো হয়েছে সোমবার। এর মধ্য দিয়ে ঢাকার মাওয়া থেকে সড়কপথে শরীয়তপুরের জাজিরাকে যুক্ত করল সেতুটি। এখন শুধু পিচঢালাই করলেই যান চলাচল করতে পারবে। কর্তৃপক্ষ আশা করছে আগামী জুনের মধ্যেই চালু করা যাবে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের জানান, সোমবার সকালে ১২ ও ১৩ নাম্বার স্প্যানের ওপর শেষ স্ল্যাবটি বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে সেতুটির সড়কপথের কাজ সম্পন্ন হলো। শেষ হলো দুই প্রান্তের সংযুক্তি।
এই স্ল্যাবটিসহ ৬.১৫ কিমি দৈর্ঘ্যের সেতুটিতে মোট ২,৯১৭টি সড়ক স্ল্যাব বসানো হয়েছে। সেতুর উপর সড়কটি হবে ২২ মিটার প্রস্থের যাতে চার লেনে গাড়ি চলাচল করবে। তবে বৃষ্টি থাকায় পিচঢালাইয়ের কাজ এখনই শুরু হবে না।
দোতলা এই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল করবে আর তার নিচ দিয়ে চলবে রেল। এর আগে ২০ জুন, রেলের সবগুলো স্ল্যাব বসানোর কাজও শেষ হয়েছে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, "মূল পদ্মা সেতুর ২,৯১৭টি রোডওয়ে স্লাবের সবকটি স্থাপনের কাজ আজ (সোমবার) সকালে শেষ হয়েছে। এর মাধ্যমে পদ্মার দুই তীরের রাস্তার সংযোগ স্থাপিত হলো। আগামী অক্টোবর মাসের শেষের দিকে কার্পেটিং এর কাজ শুরু হবে এবং ২০২২ সালের জুনের মধ্যেই পদ্মাসেতু যানচলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
এইদিন এক আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে তিনি আরও জানান, মূল পদ্মা সেতুর বাস্তব কাজের অগ্রগতি শতকরা ৯৪.২৫ ভাগ। নদীশাসন কাজের বাস্তব অগ্রগতি শতকরা ৮৪.২৫ ভাগ। পদ্মা বহুমুখী সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি শতকরা ৮৭.২৫ ভাগ।
সেতুটি চালু হলে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার সঙ্গে যোগাযোগ সহজ হবে। ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল সেতুর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন।
এদিকে প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা আগামী মার্চের মধ্যেই সেতুর সব ধরনের কাজ শেষ করার লক্ষে কাজ করছেন।
প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী (সেতু) আহম্মদ আহসান উল্লাহ মজুমদার দ্য বিজনেজ স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, "বৃষ্টির কারণে আগামী অক্টোবর মাসে পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু হবে। এছাড়া সেতুর দুই পাশের সাইড ওয়াল, মাঝখানের সড়ক বিভাজন, সড়কবাতির খুঁটি বসানো ইত্যাদি কাজ চলমান রয়েছে। সব কাজ আগামী মার্চের মধ্যেই সব কাজ শেষ করা হবে। আমরা সেইভাবে এগোচ্ছি।"
পদ্মা সেতুতে গত বছরের ডিসেম্বরে সর্বশেষ ইস্পাতের অবকাঠামো (স্প্যান) বসানোর পর মাওয়া ও জাজিরার মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হয়। এরপর কংক্রিটের স্ল্যাব বসানোর মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে পুরো ভৌত কাঠামো। স্ল্যাবের ওপরে পিচঢালাইয়ের মাধ্যমে যানবাহন চলাচলের পথ তৈরি করা হবে।