পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধের সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রমজানে দ্রব্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে ব্যবসায়ীদের দাবি অনুযায়ী সব ধরনের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
"ব্যবসায়ী নেতাদের সাথে বসেছি। তারা যে সমস্ত পয়েন্টে চাঁদাবাজির কথা জানিয়েছেন, সেখানে পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। চাঁদাবাজি শতভাগ বন্ধ করা এখনো সম্ভব হয় নি," বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই) আয়োজিত "পবিত্র রমজান মাসে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ" শীর্ষক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল, বলেন, "আমরা চাঁদাবাজিবন্ধ করতে সব ধরণের প্রচেষ্টা চালাচ্ছি। এক্ষেত্রে আপনাদের সহায়তার প্রয়োজন আছে। যেখানেই চাঁদাবাজি হয় আমাদের তথ্য দিবেন। আপনারা তথ্য দিলে আমাদের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে গিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছে,"
"আমরা চাই দেশের বাজার পরিস্থিতি যাতে এমন থাকে যেখানে ক্রেতা ও ভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনতে পারে।"
কী ধরনের সহযোগীতা করলে বাংলাদেশে রমজানের সময় পণ্যমূল্য স্থিতিশীল থাকবে, ব্যবসায়ীদের তা জানাতে অনুরোধ করেন মন্ত্রী।
"সারাবিশ্বে দেখি মুসলিম দেশগুলোতে রমজানে পণ্য মূল্য কমে যায়। আর আমাদের দেশে হয় উল্টো," বলেন তিনি।
ব্যবসায়ী, বিএসটিআই, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে সঙ্গে নিয়ে রমজানে বাজার মূল্য স্থিতিশীল ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিন সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। এক কিংবা দুই সপ্তাহ, কিংবা ঈদ পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের লকডাউনের কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি নেয়ার কথা বলেন তিনি।
তাপস বলেন, "রমাজনের প্রথম দিন থেকেই লকডাউন দেয়া হয়েছে। সবকিছু বন্ধ হয়ে যাবে। এ বন্ধ যদি সাত দিন চলে তাহলে একরকম, যদি দুই সপ্তাহ পর্যন্ত চলে, যদি ঈদ পর্যন্ত চলে তাহলে আরেকরকম চিন্তা চেতনা হবে। তবে আমাদের সকল রকম প্রস্তুতি গ্রহন করতে হবে।"
ভেজাল খাদ্য ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ডিএনসিসি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছ। অভিযান শুরু করা হবে বলেও জানান দক্ষিনের মেয়র।
তিনি বলেন, "গত ১০ বছর ধরে আমরা দেখেছি চাঁদাবাজি কীভাবে বন্ধ হয়েছে। প্রতিকূলতার মধ্যেই আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে। এটি চলমান রাখবো।"
অনুষ্ঠানে বিএসটিআই, র্যাব, ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশ, কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
বিভিন্ন ব্যবসায়ী অ্যাসোসিয়েশন থেকে জানানো হয় কোন ধরনের পণ্যের কোন ঘাটতি নেই। এসময় পাইকারি বাজার আর খুচরা বাজারে মূল্যেও তারতম্য প্রতিরোধে যৌক্তিক পদক্ষেপ নিতে আহবান জানানো হয়।
বিএসটিআই প্রতিনিধিরা জানান, বাজার মনিটরিং ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা অব্যহত আছে। রমাজানে এটি আরো জোরদার হবে।
অনুষ্ঠানিিট পরিচালনা করেন ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান হোসেন। তিনি বলেন, "কন্টেইনার পারিবহনে ১৮০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধি, কৃত্রিম সংকট তৈরি ও পরিব্হনর খাতে চাদাবাজি জনগনে উদ্বেগ সৃষ্টি করে এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে,"
পণ্য পরিবহন ও বাজার স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা চান তিনি।
রমাজান মাসে শপিংমল, জুয়েলারি দোকান, নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের বাজার আর শপিং করা মানুষের যাতায়াতের ফলে ট্রাফিক ব্যবস্থা ঠিক রাখা, এ চারটি ক্ষেত্রে অধিক মনোযোগ দিতে হয় বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়।