নামের মিলে জেল, ১৬ মাস পর মুক্তির আদেশ সেই হাসিনার
পুলিশের ভুলে মামলার আসামি না হয়েও নামের মিল থাকায় ১৬ মাস ধরে কারাগারে সাজা খাটছেন কক্সবাজারের হাসিনা বেগম। চট্টগ্রামের একটি আদালত আজ মঙ্গলবার তার মুক্তির আদেশ দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর চতুর্থ অতিরিক্ত দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার আদালত ভার্চুয়াল শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসিনা বেগমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ।
তিনি বলেন, আদালতের আদেশে চট্টগ্রাম কারা কর্তৃপক্ষ আজ মঙ্গলবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। প্রতিবেদনে কারা কর্তৃপক্ষ বলে, হাসিনা আক্তার ও হাসিনা বেগম একই আসামি নন। আদালত শুনানি শেষে সাজা খাটা হাসিনা বেগমকে মুক্তির আদেশ দেন।'
আদালতসূত্রে জানা গেছে, মাদকের মামলায় ৬ বছর সাজার আদেশ হয়েছিল কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকার বাসিন্দা হাসিনা আক্তারের। কিন্তু পুলিশের ভুলে নামের সঙ্গে মিল থাকায় ১ বছর ৪ মাস ২০ দিন ধরে সাজা খাটছেন একই এলাকার হাসিনা বেগম।
বিষয়টি গত মার্চে চট্টগ্রামের একটি আদালতের নজরে আনেন অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ। তখন আদালত বিষয়টি তদন্ত করে পুলিশকে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছিলেন। আজ কারা কর্তৃপক্ষ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর আদালত আদেশ দিয়েছেন।
আদালতে জমা দেওয়া পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে কারাগারে থাকা হাসিনা বেগম আগে গ্রেপ্তার হওয়া আসামি নন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যায়। এছাড়া হাসিনা বেগমের বয়স ৪০ বছর, কিন্তু হাসিনা আক্তারের বয়স ৩০। বর্তমান কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের স্বামী পলাতক থাকায় পূর্ণাঙ্গভাবে তদন্ত করা যায়নি।
এছাড়া প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ঘটনার সময় গ্রেপ্তার হাসিনা আক্তার ও বর্তমানে কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের ছবির মিল পাওয়া যায়নি। হাসিনা আক্তার চার বছরের ছেলে ও দুই বছরের মেয়েসহ গ্রেপ্তার হন। কিন্তু হাসিনা বেগমের সন্তান তিনজন বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ জানান, ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের কর্ণফুলি এলাকা থেকে ২০ হাজার ইয়াবা নিয়ে স্বামীসহ আটক হন টেকনাফের চৌধুরীপাড়ার হাসিনা আক্তার। ৯ মাস কারাভোগ শেষে জামিনে বের হয়ে যান তিনি। ২০১৯ সালের জুলাইয়ে সেই মামলার রায়ে তাকে দেওয়া হয় ৬ বছরের কারাদণ্ড, তখন তিনি পলাতক ছিলেন।
এরপর ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর টেকনাফ থানা পুলিশ আটক করে একই এলাকার হাসিনা বেগম নামে আরেক নারীকে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে পাঠানো হয় কারাগারে। এরপর থেকে তিনি কারাভোগ করছেন।
কারাগারে থাকা হাসিনা বেগমের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়ায়। তিনি হামিদ হোসেনের স্ত্রী। সাজাপ্রাপ্ত আসামি হাসিনা আক্তার একই এলাকার ইসমাইল হাজি বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী।