দেড় মাসে সৌদি থেকে ফিরেছেন সাড়ে ৫ হাজার বাংলাদেশি
সৌদি আরব থেকে আরও ১৪৫ বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। শনিবার রাত ১২ টা ১৫ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্স (এসভি-৮০২) বিমানযোগে তারা দেশে ফেরেন। এ নিয়ে গত দেড়মাসে সাড়ে পাঁচ হাজার বাংলাদেশি সৌদি আরব থেকে ফিরলেন।
প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় বরাবরের মতো রোববারও ফেরত আসাদের ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।
শনিবার ফেরত আসাদের একজন শহিদুল ইসলাম জানান, মাত্র তিন মাস আগে তিন লাখ টাকা খরচ করে ড্রাইভিং কাজে গিয়েছিলেন সৌদি আরবে। কিন্তু কোনো কারণ ছাড়াই তাকেও দেশে ফিরতে হয়েছে শূন্য হাতে।
মাত্র আট মাসের মাথায় নরসিংন্দীর শিবপুর উপজেলার একই গ্রামের দুই যুবক বিজয় মিয়া ও নাজির উদ্দিন দেশে ফিরেছেন। তারা বলেন, তিন লাখ করে টাকা খরচ করে ড্রাইভিং ভিসাতে যাওয়ার পর সেখানে নিয়োগকর্তা তাদের আকামা করেনি। পুলিশ ধরলে তারা নিয়োগকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের কোনো দায়িত্ব নেয়নি নিযোগকর্তা।
যাওয়ার নয় মাসের মধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আলামিন, নোয়াখালীর শাহজাহান, চাঁদপুরের আমিনুল, নারায়ণগঞ্জের হোসেন আলী, মৌলভীবাজারের পারভেজ মিয়া ও সাতক্ষীরার ওবায়দুল্লাহ।
ব্র্যাকের অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, গত দেড় মাসে সৌদি আরব থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার প্রবাসী ফিরেছেন যাদের অনেককেই যাওয়ার তিন মাস থেকে এক বছরের মধ্যে ফিরতে হয়েছে। শনিবার রাতে দু’জন বলছিলেন তারা তিন লাখ করে টাকা খরচ করে সেখানে গিয়েছিলেন। কিন্তু নিয়োগকর্তা তাদের আকামাই করেনি। পুলিশ ধরলে তারা নিয়োগকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তাদের কোনো দায়িত্ব নেয়নি। প্রশ্ন হলো কারা তাহলে সৌদি আরব পাঠালো। এই ধরনের প্রতারণা বন্ধ হওয়া উচিত।
প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারিতে তিন হাজার ৬৩৫ জন এবং ফেব্রুয়ারিতে এক হাজার ৯৫৯ জন সৌদি আরব থেকে ফিরে এসেছেন। এদের মধ্যে অণ্তত তিনশ’ জন রয়েছেন নারী। আর প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ সালে মোট ৬৪ হাজার ৬৩৮ কর্মী দেশে ফিরেছেন যাদের পরিচয় ডিপোর্টি। এদের মধ্যে ২৫ হাজার ৭৮৯ জনই ফিরেছেন সৌদি আরব থেকে।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান আরও বলেন, ফেরত আসা এই প্রবাসীদের পাশে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা সবার সমন্বিতভাবে দাঁড়ানো উচিত। পাশাপাশি এভাবে যেন কাউকে শূন্য হাতে ফিরতে না হয় এবং প্রত্যেকে গিয়ে যেন কাজ পায় এবং কাজের মেয়াদ শেষে খরচের টাকাটা অন্তত তুলতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হবে। রিক্রুটিং এজেন্সি, দূতাবাস ও সরকার সবাই মিলে এই কাজটি করতে হবে।