তিন ঘণ্টার বৃষ্টিতে ডুবল চট্টগ্রাম
তিন ঘণ্টার ভারি মাত্রার বজ্রবৃষ্টিতে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা পানিতে ডুবে গেছে। রোববার সকাল সাড়ে ৮টার পর থেকে মূলত ভারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়।
চট্টগ্রাম আবহাওয়া অফিসে পূর্বাভাস কর্মকর্তা ড. শহিদুল ইসলাম দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, 'মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বেলা ১২টা পর্যন্ত পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ৭৫ দশমিক ৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছিল। এখনো একটানা ভারি বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় প্রাক-বর্ষার এমন ভারি বর্ষণ বিরতিসহ অব্যাহত থাকতে পারে।'
এদিকে, নগরের নিচু এলাকাগুলোর মধ্যে চকবাজার, বাকালিয়া, শুলকবহর, আগ্রাবাদ, হালিশহর, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, কাপাসগোলা, প্রবর্তক মোড়, কে বি আমান আলী রোড, ডিসি রোড, চান্দগাঁও, ষোলশহর ২ নম্বর গেট, মেয়র গলি, আগ্রাবাদ এক্সেস সড়ক, নাসিরাবাদ ও দেওয়ানবাজারসহ বিভিন্ন এলাকা সকাল ১০টার পর থেকে হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। পানি ঢুকে গেছে বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে।
চান্দগাঁওয়ের বাসিন্দা মোহাম্মদ হোসেন বলেন, 'জলাবদ্ধতা নিরসন প্রজেক্টের কারণে খালে বাঁধ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এখন বৃষ্টি হলেই সমস্যার মধ্যে পড়ছে এই এলাকায় বাসিন্দারা। কর্তৃপক্ষ কেন প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছু করছে না তা আমরা বুঝতে পারছি না।'
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে ৫ হাজার ৬১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সেটি বাস্তবায়ন করছে সেনাবাহিনীর ৩৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। এই প্রকল্পের আওতায় খালগুলোর মুখে জলকপাট ও প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণের কাজ চলছে। এজন্য খালের ভেতরের বিভিন্ন অংশে অস্থায়ীভাবে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। এসব বাঁধের কারণে অতিবর্ষণ হলেই নগরবাসীকে পোহাতে হচ্ছে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ।
তবে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তাদের দাবি, ড্রেন পরিষ্কার রাখতে তাদের কর্মীরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, যেন পানি দ্রুত নেমে যায়। জোয়ারের সময় ভারি বৃষ্টির কারণে নিচু এলাকাগুলোয় পানি জমে গেছে। এ পানি দ্রুত নেমে যাবে।
এছাড়া চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওমর ফারুক জানান, পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থানরত জনসাধারণের মাঝে সচেতনতার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে। সম্ভাব্য দুর্যোগপরবর্তী সময়ের জন্য শুকনো খাবার, পর্যাপ্ত সুপেয় পানির ব্যবস্থা এবং চিকিৎসা সেবাদানের জন্য মেডিকেল টিম ও পর্যাপ্ত ওষুধপত্র প্রস্তুত রেখেছে চসিক।
নগরবাসীকে যে কোনো জরুরি সেবা দেওয়ার জন্য কন্ট্রোল রুম খুলেছে চসিক। কন্ট্রোল রুমের ফোন নম্বরগুলো হলো: ০৩১-৬৩০৭৩৯, ০৩১-৬৩৩৬৪৯।