ডিজেল পাচার বন্ধে বেনাপোল সীমান্তে সতর্কতা বিজিবির
বেনাপোল বন্দর সীমান্ত দিয়ে ডিজেল পাচার রোধে নজরদারি ও তৎপরতা বাড়িয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ-বিজিবি। এর অংশ হিসেবে, বাংলাদেশে প্রবেশ ও বের হওয়ার সময় ভারতীয় ট্রাকের তেলের পরিমাণ এন্ট্রি করা হচ্ছে।
বিজিবির ৪৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল সেলিম রেজা জানান, 'সীমান্তপথে সব ধরনের চোরাচালান ও পাচাররোধে বিজিবি আন্তরিকতা ও সতর্কতার সাথে দায়িত্ব পালন করে আসছে। বেনাপোল সীমান্তপথে ডিজেল পাচারের সুযোগ দেওয়া হবে না। দেশের এ সম্পদ যাতে কোনোভাবেই পাচার না হয়, আগে থেকে সে ব্যাপারে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ভারতীয় ট্রাকের তেলের পরিমাণ এন্ট্রি করায় ট্রাকের মাধ্যমে পাচারের আর কোনো সুযোগ থাকবে না।'
বেনাপোল বন্দরে রপ্তানি পণ্য নিয়ে আসা ট্রাক চালক আলামিন বলেন, 'আগে থেকেই বিজিবি তেল পাচার বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এটি ভালো উদ্যোগ। ভারতে তেলের দাম বেশি এবং বাংলাদেশে কম। লোভে পড়ে অনেকেই তেল পাচার করতে পারে।'
বন্দরসূত্রে জানা যায়, এক মাস আগে ভারতে ডিজেলের মূল্য ছিল প্রতিলিটার ১০২ রুপি। গত ৩ নভেম্বরে দাম কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ৯১ রুপিতে। অপরদিকে বাংলাদেশে ডিজেলের দাম ছিল প্রতি লিটার ৬৫ টাকা। গত ৪ নভেম্বর প্রতিলিটারে ১৫ টাকা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৮০ টাকা।
আলামিন আরও বলেন, অনেক ভারতীয় ট্রাক বেনাপোল বন্দরের বাইরে গিয়ে পণ্য খালাস করে। সেখানে বন্দরের কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই। তেল পাচার রোধ করতে হলে, আগে বন্দরের বাইরে পণ্য খালাস বন্ধ করতে হবে।
তবে বিজিবির পক্ষ থেকে পাচার রোধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও, বন্দর কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি।
ভারতীয় ট্রাকচালক বিকাশ জানান, তিনি এর আগে বাংলাদেশে আমদানি পণ্য নিয়ে আসতেন। তখন ট্রাকের তেল মাপা হতো না। এখন বিজিবি সদস্যরা আসার সময় স্কেল দিয়ে তেল পরিমাপ করছে, ফেরার সময়ও তেলের পরিমাণ দেখাতে বলেছে।
বিজিবির এমন পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে বন্দর সংশ্লিষ্ট বাণিজ্যিক সংগঠনগুলো।
বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক জানান, 'সরকার বিদেশ থেকে বেশি মূল্যে তেল কিনে দেশে সরবরাহ করছে। আর এ তেল যদি বাইরে পাচার হয় সেটি ক্ষতিকর। তবে পাচার প্রতিরোধে আগে থেকেই বিজিবিকে সর্তক ব্যবস্থা নিতে দেখা যাচ্ছে। এমন পদক্ষেপের জন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে তাদের সাধুবাদ জানাই।'
তবে বিজিবির পাশাপাশি বন্দরের অন্যান্য প্রশাসনিক সংস্থাগুলো নজরদারি বাড়ালে তেল পাচারের কোনো সুযোগ থাকবে না বলে মনে করছেন তিনি।
বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, 'ভারতীয় ট্রাক বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের পর বিজিবি সদস্যরা তেলের পরিমাণ এন্ট্রি করছেন। বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীদেরকেও সতর্ক রাখা হয়েছে।'