চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেয়ার আবেদন
বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে সরকারের কাছে আবেদন করেছে তার পরিবার।
খালেদা জিয়ার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার বুধবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এই লিখিত আবেদন জমা দিয়েছেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল গণমাধ্যমকে বলেন, "খালেদার ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার রাত সাড়ে ৮টায় একটি আবেদন নিয়ে এসেছিলেন। আমরা তা পেয়েছি এবং গাইডলাইন মেনে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তা আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে"।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের আরও জানিয়েছেন যে, এই আবেদনটিকে সরকার ইতিবাচকভাবেই দেখছে।
বুধবার রাতে আবেদন জমা দেওয়ার পরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসার সামনে গণমাধ্যমের সাথে শামীম ইস্কান্দারও কথা বলেছেন।
তিনিও বলেন, "স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন যে তিনি আবেদনটি ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবেন এবং আইন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করবেন"।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর খালেদা জিয়া ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় গত সোমবার বিএনপি নেত্রীকে হাসপাতালের সিসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল টিমের বেশ কয়েকজন সদস্য জানান যে দলটি নিয়মিত তার স্বাস্থ্যগত অবস্থার পর্যালোচনা করছে এবং এখন পর্যন্ত তারা পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট।
খালেদার একজন ব্যক্তিগত চিকিৎসক জানান যে, তিনি আগে নিয়মিত সিঙ্গাপুর ও লন্ডনে চিকিৎসা করাতে যেতেন। সেখানে তার চিকিৎসার সাথে জড়িত চিকিৎসকবৃন্দ ভাল করেই তার শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত। সুতরাং তাকে যদি চিকিৎসার জন্য বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়, তবে তার সুচিকিৎসা আরও ভালমত সম্ভব।
সেক্ষেত্রে ডাক্তাররা তাকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যেতে পরামর্শ দেন।
গত ১০ এপ্রিল প্রথম খালেদা জিয়ার করোনা পজিটিভ ফল আসে। ২৪ এপ্রিল খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় দফা করোনা পরীক্ষাতেও ফলাফল পজিটিভ আসে।
দুর্নীতির মামলায় ২৫ মাস কারাভোগের পর করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে নির্বাহী আদেশে ছয় মাস দণ্ড স্থগিত হওয়ায় গত বছরের ২৫ মার্চ সাময়িক মুক্তি পান সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী।
একইদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে মুক্তি পান তিনি এবং তখন থেকেই গুলশানের বাসভবন 'ফিরোজা'য় অবস্থান করছেন।
গত বছরের ২৭ আগস্ট ছয় মাস এবং এরপর গত ১৫ মার্চ আরও ছয় মাসের জন্য তার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠায় আদালত। পরে হাইকোর্ট তার সাজার মেয়াদ দ্বিগুণ করে। একই বছরে তিনি আরও একটি দুর্নীতির মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। যদিও তার দল বলছে, দুটি মামলাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।