চলমান লকডাউন এক সপ্তাহ বাড়ানোর পরামর্শ জাতীয় পরামর্শক কমিটির
চলমান কঠোর লকডাউন আরও এক সপ্তাহের জন্য বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছে কোভিড ১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
গতকাল রাতে এক বৈঠকের পর কমিটি জানায়, বর্ধিত লকডাউনের শেষ দিকের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সভায় দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের অবস্থা ও প্রতিরোধে গৃহীত পদক্ষেপ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সারাদেশে কোভিড-১৯ এর উচ্চ সংক্রমণ ও ক্রমবর্ধমান মৃত্যুতে সভা উদ্বেগ প্রকাশ করে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর আগে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি কমপক্ষে দুই সপ্তাহের জন্য পূর্ণ লকডাউন সুপারিশ করেছিল।
সরকার ইতোমধ্যে ১৪ই এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের লক ডাউন ঘোষণা করেছে। কমিটি এই সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। তবে দুই সপ্তাহের কম লকডাউনে কার্যকর ফলাফল আশা করা যায়না।
দেশের অর্থনীতি সচল রাখার স্বার্থে শিল্প-কলকারখানা খোলা রাখার বিষয়টি কমিটি উপলব্ধি করে। তবে, বেসরকারি দপ্তর, ব্যাংক খোলা রাখা, ক্রমবর্ধমানভাবে ব্যক্তিগত গাড়ী চলাচল, ইফতার বাজারে অনাকাঙ্খিত ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত ভিড় লকডাউনের সাফল্যকে অনিশ্চিয়তার মুখে ফেলে।
পাশাপাশি সামাজিক সমতার বিষয়েও নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়।
স্বাস্থ্য, ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য জরুরি সেবা ছাড়া সব কিছু বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।
খোলা রাখা জরুরি সেবার তালিকা প্রকাশ করার অনুরোধ করে কমিটি। অন্যথায় বিরূপ পরিস্থিতির আশংকা থাকে।
উন্মুক্ত স্থানে কাঁচা বাজার স্থাপনের জন্য জায়গা নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়।
কমিটি আরও এক সপ্তাহের জন্য কঠোর লকডাউন এর সুপারিশ করে। পরবর্তীতে সপ্তাহ শেষে সংক্রমণের হার বিবেচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে বলে জানানো হয়।ধীরে ধীরে লক ডাউন শেষ করার পূর্ব পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেয়া হয়।
ডিএনসিসি কোভিড হাসপাতাল চালু হওয়ায় সরকারকে অভিনন্দন জানায় কমিটি।
রোগী ভর্তির বাড়তি চাপ থাকায় অতি দ্রুত আরও সক্ষমতা বাড়ানোর ব্যবস্থা গ্রহণের উপরও জোর দেওয়া হয়।
নমুনা পরীক্ষা সহজলভ্য করার উদ্দেশ্যে কমিটি ইতোমধ্যে সরকারি নমুনা পরীক্ষা বিনামূল্যে করার পরামর্শ দিয়েছে। পিসিআর টেস্ট কিটের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ায় বেসরকারি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষার মূল্য পুনঃনির্ধারণের পরামর্শ দেওয়া হয়।
এতে পরীক্ষার সংখ্যা বাড়বে, সেইসাথে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে নিয়ে আসবে ও সাশ্রয়ীমূল্যে পরীক্ষা করা যাবে। সরকারি ল্যাবরেটরির ওপর চাপ কিছুটা কমবে। এতে করে রোগীদের পরীক্ষা ও রিপোর্ট দ্রুত প্রদান করে আইসোলেশন নিশ্চিত করা যাবে যা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরকারি/বেসরকারি সকল হাসপাতাল, ক্লিনিকে গর্ভবতী করোনা/নন করোনা মা'দের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিন্ত করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
প্রতিটি হাসপাতাল নিজস্ব সক্ষমতা অনুযায়ী চেইন অফ রেফারেন্স সিস্টেম মেনে চলবে।
সকল মৃদু করোনা রোগীদের বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য টেলিমেডিসিন সেবা অব্যাহত রাখা প্রয়োজন।
সেই সাথে গুণগত সেবা নিশ্চিত করতে টেলিমেডিসিন সেবা নিয়মিত মনিটরিং জোরদার প্রয়োজন বলে উল্লেখ করে কমিটি।